সম্পাদকীয়: চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। বছরের প্রথম চার মাস ডেঙ্গুরর প্রকোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রিত থাকলেও আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া তিনজনই ঢাকার বাসিন্দা। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের তিনজন ও ঢাকার বাইরের ছয়জন। ৩ মে সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এ বছর জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন যাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসের প্রথম তিনদিনে ৩৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডিসেম্বর মাসের জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীর বাড়িঘরে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি ২০২২ সালের বর্ষা পরবর্তী সময়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি বেড়েছে। জরিপের ফল দেখে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, আগামীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ আকার ধারণ করতে পারে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু দেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশে বড় ধরনের ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয় ২০০০ সালে। এরপর থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু হচ্ছে। গতবছর ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিলো।
সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর-এই সময় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এখন ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোনো মৌসুম নেই। সারাবছরই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। আগে মনে করা হতো ডেঙ্গু নগর কেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু নগরের বাইরেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে মশার উপদ্রব অত্যন্ত বেশি।
গ্রামের মানুষ ইচ্ছা করলেই সতর্ক থাকতে পারে না। তাদেরকে আগলা শরীরের সারা দিন তো বটেই, রাতের একটা অংশও কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ সময় মশায় কামড়ালে করার কিছু থাকে না না। তাই গ্রামে যাতে মশা নিধনে শক্তিশালী ব্যবস্থা নেয়া যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। এ বিষয়ে এখনই আমাদের সতর্ক হতে হবে।
ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু বিস্তৃত হয়েছে। কাজেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার বাইরেও অভিযান চালাতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার- প্রচারণা চালাতে হবে, অভিযানে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
স্বাআলো/এস