নোবেল পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার নেই: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাস্তির পেছনে ‘সরকারের কোনো হাত নেই’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালত তাকে শাস্তি দিয়েছে। এখানে আমার দোষটা কোথায়? মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার মধ্যে কখনো ছিলো না, এখনো নেই। আমি জানি এসব পুরস্কার যারা পান, তার পেছনে একটি রাজনীতি থাকে। আমি এগুলো চাই না। অথচ পার্বত্য অঞ্চলে আমি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি। শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটি বিরল ঘটনা। শেখ হাসিনা কারো সঙ্গে জেলাসি (হিংসা) করে না।

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত-চীন দুই দেশই প্রস্তাব দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

মঙ্গলবার (২৫ জুন) গণভবনে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করার পর অনেক বিদেশি, অনেক নোবেল বিজয়ী আমাকে নিয়ে লিখেছে। কই আমি তো তদবির করতে যাইনি। ওগুলো আমার মাথার মধ্যেও নেই। যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একটা এমডি… সে যখন একটা নোবেল প্রাইজ পায়, সেখানে আমি কনটেস্ট করতে যাব কেন?

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি আমি করেছি। পৃথিবীতে অনেক শান্তিচুক্তি হয়েছে, কয়টা অস্ত্রধারী আত্মসমর্পন করেছে? এক হাজার ৮০০জন অস্ত্রধারী আমার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে। আমি তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তির কারণে আজ সেখানে উন্নয়ন হয়েছে। চুক্তির আগে সেখানে কী অবস্থা ছিলো? সেখানে কি আমরা কেউ যেতে পারতাম? ৬৪ হাজার শরণার্থী ছিলো ভারতে। আমি তাদের ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠিত করেছি।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে: প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরো বলেন, কেউ যদি এখন আমার নামে নোবেলের জন্য প্রস্তাব দেয়… আমরা তো যাইনি তাদের কাছে। আমার আসলে এসব পুরস্কারের দরকার নেই। এখানে আলাদা একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে, এখানে আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। আর বলে দিলো- এটা নিয়ে আমার নাকি জেলাসি!

সরকারপ্রধান বলেন, তিনি (ড. ইউনূস) তো রাজনৈতিক দল করতে চাইছিলেন, সেটিও লেখালেখি হয়েছে। ২০০৭ সালে দল করতে গিয়ে তিনি ব্যর্থ হলেন কেন? গ্রামের মানুষের জন্য যিনি এত কিছু দিয়ে থাকেন, তিনি দল করতে পারলেন না কেন? তার দলে তো সেই মানুষগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। তারা সাড়া দেয়নি। কারণ তারা সুদের চাপে মৃতপ্রায় ছিলো। সে দায় কি আমার? আর আমি তো তখন জেলে।

৮ জুলাই চীনে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমি বিদেশে… আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেয়া হয়েছিলো। আমি তো দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাকে বলা হলো, ফিরতে দেয়া হবে না। আমি তো ফিরেছি। আমার সঙ্গে তার কীসের তুলনা? … যায় না। তিনি বলেন, আমি তো কখনো কিছু বলিনি। একটা প্রশ্ন আমার, এই যে বিদেশে বিনিয়োগ, এটা কীভাবে হলো? টাকাটা কোত্থেকে আসলো, কাদের টাকা? সেই জবাবটা দিক। একটা সংবিধিবদ্ধ চাকরিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে বিনিয়োগ, আইন কী বলে? আমরাই তো সবাই মিলে তাকে তুলেছি, এটা ঠিক। এখন নাকি সব দোষ আমার। কারণ সবচেয়ে বেশি টাকা আমি দিলাম তার গ্রামীণ ব্যাংকে।

নতুন প্রজন্মই স্মার্ট বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার গ্রামীণ ব্যাংক দাঁড় করাতে টাকা দেয়া, ১৯৯৭-৯৮ সালে বন্যা… গ্রামীণ ব্যাংক যায় যায় অবস্থা। ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি যে করে, তার মূল্যায়ন এমন! আবার জেলাসি… জেলাসি করার কী আছে? সে আসুক না, মাঠে আসুক! চলুক আমার সঙ্গে। আসুক, কথা বলবো। সবচেয়ে বেশি আর্থিক সুবিধা নিয়েছে আমার কাছ থেকেই।

শেখ হাসিনা বলেন, উনার পয়সা আছে, উনি লেখাচ্ছেন। উনি যদি এতই জনপ্রিয় হন, তাহলে বিজ্ঞাপন কেন? তার জন্য তো সারা বিশ্ব ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। একটা মামলা চলছে। সেটা নিয়ে তো আমি কথা বলতে যাই না।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি, কৃষকদের মাঝে আনন্দ

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট থেকে:উজানের ঢল ও শনিবার রাতের বৃষ্টিতে...

মরুকরণের মুখে উত্তরের জীবনরেখা

# পানিশুন্য তিস্তায় চাষাবাদ ব্যাহত, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি হাসানুজ্জামান হাসান,...

দুই ধাপে ৬ দিন ছুটি পাচ্ছেন চাকরিজীবীরা

ঢাকা অফিস: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলতি মে মাসে দুই দফায়...

উপকূলে নদী রক্ষা বাঁধে ফাটল, আতঙ্কে গ্রামবাসী

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের...