ঢাকা অফিস: বিভিন্ন জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ। প্রখর রোদের পাশাপাশি ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি মিলেছে না কোথাও। অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
তবে ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক কম থাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। এসময়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের অধিকাংশই শিশু।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে অতিরিক্ত গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। অনিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে।
তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে
আইসিডিডিআরবি সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সময়ে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি থাকে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ পর্যন্ত। তবে বর্তমানে হাসপাতালটিতে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
জানা গেছে, রবিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টা থেকে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে আড়াইশো জনের মতো ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এর আগে গত রবিবার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো ৪৩৪ জন, শনিবার ৫২৫, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রোগী ভর্তি হয়েছিলো ৫৯৫ জন।
আইসিডিডিআর,বির অ্যাসিস্ট্যান্ট সাইন্টিস্ট (নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস ডিভিশন) ডা. সারিকা নুজহাত বলেন, এখনো আমাদের হাসপাতালে রোগীর পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে আছে। কিছুদিন যাবত কেবল গরম পড়েছে, আবার ঈদের ছুটিটাও এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। হয়তো আগামী ১/২ সপ্তাহের মধ্যেই রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়ে যাবে।
খুলনাসহ ছয় বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ
তিনি বলেন, যেহেতু গরমটা বেশি, স্বাভাবিকভাবে মানুষ বেশি তৃষ্ণার্ত ও পিপাসার্ত থাকে। আমাদের পরামর্শ হলো যেসব ছোট বাচ্চা বুকের দুধ খায়, তাদের অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এটি বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাছাড়া বাইরের খাবারদাবারে বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার খুবই কম হয়, যার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বড়দের মধ্যে যারা বাইরে কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই গরমে পিপাসা মেটাতে বাইরের বিভিন্ন শরবত ও খোলা পানি পান করেন। তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, বাইরের এসব খোলা পানীয় শরবত কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। বাইরে কাজ করতে হলে অবশ্যই বাসা থেকে বিশুদ্ধ পানি বোতলে করে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
সারিকা নুজহাত আরো বলেন, এখন যেহেতু গরমের সিজন, বাসায় খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। এক্ষেত্রে খাবার সংরক্ষণের দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে। এই গরম নষ্ট, পচা-বাঁশি খাবার কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। এমনকি বাইরের খোলা খাবার পরিহার করতে হবে।
স্বাআলো/এস