যশোরের ভৈরব নদীতে কচুরিপানায় ভরে গেছে, পানি প্রবাহে বিঘ্ন

রুহুল আমিন, যশোর: যশোর ভৈরব নদীতে পট-কচুরিপানায় ভরে গেছে। স্বাভাবিকভাবে পানির প্রবাহ হচ্ছে না। সেই জন্য জোয়ার-ভাটায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ার-ভাটা প্রবাহমান রাখতে পট-কচুরিপানা পরিষ্কার করার বিকল্প নেই। পরিষ্কার করা হলে নদীর সৌন্দর্য্য ফিরে আসবে সেই পানির প্রবাহের গতিও বাড়বে।
ভৈরব নদীর পুরানো যৌবন ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।
দেখা যায়, যশোরের ভৈরব নদী যশোর অঞ্চলসহ দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নদী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। এক সময়ে ভৈরবের ব্যাপক তৎপর্যময় ভূমিকা ছিলো। বড় বড় জাহাজ চলাচল করতো ভৈরবের বুক দিয়ে। নদী পথে চলাচলের জন্য ভৈরবের বেশ সুনাম ছিলো। নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় ভৈরবের যৌবনে ভাটা পড়া শুরু করে। জোয়ার-ভাটাও বন্ধ হতে থাকে। দীর্ঘদিন পরে ভৈরব নদী খনন হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আশা জাগে ভৈরব তার পুরানো যৌবন ফিরে পাবে। খননের পর জোয়ার-ভাটা বেশ লক্ষ্য করা যায়। পানির প্রবাহও চলমান হয়। এবারের বর্ষার মৌসুমে ভৈরব নদী কানায় কানায় ভরে যায়। কিন্তু নদীতে পট-কচুরিপানায় ভরে গেছে। জোয়ার-ভাটা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। পানির প্রবাহ স্বাভাবিকভাবে চলমান হচ্ছে না। তাই দ্রুতই পট-কচুরিপানা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অধ্যক্ষ মোজ্জামেল হক বলেন, ভৈরব নদী যশোরের ঐতিহ্য। ভৈরবকে রক্ষা করার জন্য সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। খনন করা হলেও ভৈরবে পানির প্রবাহ চলমান হচ্ছে না। চারদিকে পট-কচুরিপানায় ভরে গেছে। ভৈরবকে বাঁচানোর জন্য দ্রুতই পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
এনজিও কর্মী সুধান্য দাস বলেন, ভৈরব জীবিত হলে যশোর অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে অন্য রকম আমেজ সৃষ্টি হবে। ভৈরব কেন্দ্রিক যশোর জেলা বাণিজ্যিক প্রাণ ফিরে পাবে। ভৈরবের অবস্থান ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, ভৈরব নদীতে জোয়ার-ভাটায় পট-কচুরিপানায় ভরে গেছে। দুই বার পট-কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছে। মূলত মিষ্টি পানিতে পট-কচুরিপানা বেশি হয়। ভৈরব নদীর পানি মিঠা সেই জন্য পট-কচুরিপানা বেশি হচ্ছে। পট-কচুরিপানা স্থির থাকলে জোয়ার-ভাটার পরিবেশে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ভালোভাবে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। নদীর সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়।
কাঠেরপুল থেকে দড়াটানা পর্যন্ত কয়েকবার পট-কচুরিপানা পরিষ্কার হয়েছে। চারদিকে বাঁশও বেঁধে দেয়া হয়েছিলো। মিঠা পানির জন্য পট-কচুরিপানা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। জোয়ারের কারণে বেড়ে গেছে। লবণ পানি দিলে পট-কচুরিপানা মারা সম্ভব। কিন্তু সেটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বর্ষার মৌসুম পার হওয়ার পরে পট-কচুরিপানা পরিষ্কার করে চারপাশে বাঁশ বেঁধে দেয়ার উদ্দ্যোগ নেয়া হবে।
স্বাআলো/এস