জাতীয়

শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু কাল, প্রস্তুত ৩৩ হাজারের বেশি মণ্ডপ

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | September 27, 2025

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। পাঁচ দিনব্যাপী এই মহোৎসব আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে।

এ বছর সারাদেশে উৎসবের পরিধি বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় এক হাজার ৮৯৪টি বেশি। ঢাকা মহানগরীতে ২৫৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে মণ্ডপ নির্মাণ, আলোকসজ্জাসহ সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

পূজাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিরাজ করছে এক উৎসবের আমেজ। এই উপলক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার (বিজয়া দশমী) সরকারি ছুটি থাকবে। এর সঙ্গে শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি যুক্ত হওয়ায় দেশবাসী টানা চার দিনের লম্বা ছুটি উপভোগের সুযোগ পাবে।

এবারের পূজার প্রধান তিথিগুলো হলো: ২৮ সেপ্টেম্বর: মহাষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর: মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর: মহাষ্টমী, ১ অক্টোবর: মহানবমী, ২ অক্টোবর: বিজয়া দশমী।

শাস্ত্রীয় বিধান মতে, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে গজে (হাতি), যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলার প্রতীক। তবে দেবীর প্রস্থান হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ বলে বিবেচিত এবং মহামারী বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে।

শাস্ত্রকারদের ব্যাখ্যা অনুসারে, দেবী দুর্গা ভক্তদের সকল প্রকার বাধাবিপত্তি, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা ও যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেন। ‘মহাচণ্ডী’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শক্তি বৃদ্ধির জন্য শরৎকালে মহামায়ার পূজা করেছিলেন এবং এর ফলেই তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর শরৎকালে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছেন।

উৎসব সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। রাজধানী ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে।

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র ও মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা এবং বিজয়া শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজারসহ বিভিন্ন মন্দিরে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। `

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo