খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সভার মাধ্যমে উপস্থিত আইনজীবীরা নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহবায়ক আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু।
সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এডহক কমিটির সদস্য সচিব নুরুল হোসেন রুবা বলেন, এডহক কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সকল দুর্নীতির তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত দেখা যায় সাবেক সভাপতি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিশেষ কল্যাণ শাখা থেকে তিনি ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। যার জন্য দুদকে মামলা করা হয়েছে। চেম্বার ভাড়া দেয়ার কথা বলে ৩৪ জন আইনজীবীর কাছ থেকে ৬৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। অসংখ্য ফলস ভাউচার তৈরি করেছে। এগুলো কমিটি তদন্ত করছেন।
তিনি আরো বলেন, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের একটি সিডিউল আছে। যার নির্দিষ্ট তারিখ আছে। আমরা সেই তারিখে নির্বাচন দিতে বাধ্য। সেভাবে আমরা নির্বাচন করার জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিলো। কিন্তু সাধারণ আইনজীবী (১০১ জন) শনিবার দরখাস্ত করেছেন সাবেক সভাপতি সাইফুলের দুর্নীতির তদন্ত ও মামলা শেষ না করেই নির্বাচন দিলেই তদন্ত ব্যাহত হবে। এ কারণে সাধারণ আইনজীবীরা রিকুজিশন মিটিং আহবান করেছেন। সেই আলোচনা সভায় সাধারণ আইনজীবীরা স্বতস্ফুতভাবে জানায় আপাতত এ নির্বাচন স্থগিত থাকবে এবং এ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, গত ৪ আগষ্ট সাধারণ জনতা যখন মিছিল করছিলো তখন সাইফুল তার বিরাট বাহিনী নিয়ে মিছিলের ওপর হামলা করেছিল। সে ব্যাপারে মামলা হয়েছিল কিন্তু পুলিশ বাহিনী তাদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।
তিনি বলেন, নৌ পরিবহণ মালিক গ্রুপে এ্যাডভোকেট সাইফুল সদস্য ছিলেন। সেখানে তিনি নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। এখানে সে অর্থের জোরে নির্বাচন করতে আসতে পারেন। সাইফুলের যাবতীয় দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত হোক তাকে বিচারের আওতায় আনা হোক তারপর নির্বাচন, বলে সাধারণ আইনজীবারা মতামত প্রদান করেছেন। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সাইফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর তদন্ত শেষ হবে বলে তিন মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, ভোটার তালিকার একটু সংশোধনের ব্যাপার রয়েছে। এখানে যারা চাকরি করেন তাদেরও সমিতির সদস্য করা হয়েছে। তাদেরও বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে যাবতীয় কাজগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। অস্ত্র ও অর্থের কোন ব্যবহার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অস্ত্র না হলে অর্থের ব্যবহার হবে। সাইফুল কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দুর্নীতির অভিযোগগুলো থেকে বাচার জন্য তার পক্ষের শক্তিগুলোকে অর্থ দিয়ে ব্যবহার করবেন যাতে তার বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগগুলোর তদন্ত ব্যাহত হয়। যে কারণে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। যদি এখনই নির্বাচন হয় সাইফুল কালো টাকা দিয়ে সদস্য দিয়ে সাইফুলে বিজয়ী হওয়ার ব্যবস্থা করবে এবং তার তদন্ত বন্ধ করার চেষ্টা করবে। এ কারণে সাধারণ আইনজীবীরা আশংকিত হয়ে নির্বাচন স্থগিত করার দরখাস্ত করেছেন বলে তিনি মনে করেন।
স্বাআলো/এস