চলতি বছেরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ৫৯৮ জন নিহত হয়েছেন এবং ৯ হাজার ৬০১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের ৩৪.৩৬ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার।
রবিবার (২০ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে তারা।
এতে জানানো হয়, এ বছর ২ হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ৯২৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৪.৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২.২৯ শতাংশ।
এই সময়ে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছেন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ৮৫ শতাংশ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ যানবাহনের অতিরিক্ত গতি। যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের ওপরে প্রতি ৫ কিলোমিটার বৃদ্ধিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ২ থেকে ৪ গুণ বৃদ্ধি পায়।
সড়ক দুর্ঘটনার ১১টি কারণ জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন;
২. বেপরোয়া গতি;
৩. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা;
৪. তরুণ-যুবাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো;
৫. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা;
৬. সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া;
৭. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা;
৮. বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি;
৯. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
১০. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল;
১১. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা;
সড়ক দুর্ঘটনারোধে সংস্থাটির ১২টি সুপারিশ
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে;
২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে;
৩. বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;
৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে;
৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে;
৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে;
৭. সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করা;
৮. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা;
৯. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমানো;
১০. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করা;
১১. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করা;
১২. সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখি সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো।
স্বাআলো/এস