সিলেট ব্যুরো: টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল। এতে চারটি উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সুরমা, কুশিয়ারা, ডাউকি, সারি ও সারিগাঙ্গ নদীর পানি পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ।
সুরমা নদী কানাইঘাটে, কুশিয়ারা অমসিদে, সারি নদী সারিঘাটে, ডাউকি জাফলংয়ে, সারিগাঙ্গ গোয়াইনঘাট বিপৎসীমার প্রায় এক মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগিল, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে।
ঝড়ে লণ্ডভণ্ড বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের স্টেডিয়াম
এ দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পানিতে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীর পানি ইতিমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।
তবে তিনি আশা প্রকাশ করে আরো বলেন, এই পানি আরেকটু বৃদ্ধি পাবে; তারপর নেমে যাবে।
জানা যায়, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলা পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ এখন পানিবন্দি। এ ছাড়া উপজেলার রুস্তমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং ও মধ্য জাফলং বেশি প্লাবিত হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। উপজেলার ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ সজীব হোসাইন বলেন, ‘২০২২ সালের মে মাসে সিলেট আবহাওয়া অফিসের রেকর্ডকৃত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৩৯ মিলিমিটার। ২০২৩ সালের মে মাসে ছিলো ৩৩০ মিলিমিটার এবং ২০২৪ সালের মে মাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭০৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন বলেন, বন্যা পরিস্থিতির জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। দ্রুত উদ্ধার অভিযান চলছে। সেনাবাহিনীও ইতোমধ্যে রেকি করেছে। প্রয়োজনে তারাও উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে যোগ দেবে।
স্বাআলো/এস