বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে কোথাও প্রত্যাশা মতো ভর্তি হতে না পেরে অভিমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক তরুণী।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। রাত সোয়া ৮টার দিকে রাজবাড়ীর সোনাকান্দর এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
নিহত ওই তরুণীর নাম পিউ কর্মকার (১৮)। বাড়ি রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বিনোদপুর এলাকায়। তিনি রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে বের হয়ে সন্ধ্যার পরেও বাড়ি ফেরেননি পিউ। পরে তার ফেসবুক পোস্ট দেখে স্বজনেরা শহরের গোদার বাজার ও সোনাকান্দর এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
শার্শায় মোবাইল কিনে না দেয়ায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল রাত সোয়া ৮টার দিকে সোনাকান্দর ঘাট এলাকা থেকে পিউকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ওই তরুণী মারা গেছেন।
পদ্মায় ঝাঁপ দেয়ার আগে পিউ তার ফেসবুকে লিখেন, মা-বাবার অনেক স্বপ্ন ছিলো আমাকে নিয়ে, কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারিনি। আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো, পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ার। আমার এবং দাদুর ইচ্ছে ছিলো, আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো। এর জন্য আমি অনেক চেষ্টাও করেছি, দিনরাত পড়াশোনা করেছি। কিন্তু আমার ভাগ্য খারাপ। গুচ্ছ পরীক্ষা আমার শেষ ভরসা ছিলো, এখানেও আমি ভুল করে এসেছি।
তিনি আরো লিখেন, সারাদিন ঘরের মধ্যে একা একা থাকি, মানুষের কতো ফ্রেন্ড কিন্তু আমার পাশে কাউকে পাইনি, আমাকে একটু সাপোর্ট করেনি কেউ। হয়তো আমাকে সাপোর্ট করার মতো কেউ থাকলে আজ এই মৃত্যুটা হতো না। আমার মৃত্যুর জন্য আমার বড় বড় স্বপ্নগুলোই দায়ী।
পিউ তার পোস্টের লাস্টে লিখেন, আমাকে শেষবারের মতো দেখতে চাইলে নদীর জলেই খুঁজো। আমাকে মাফ করে দিয়ো সবাই, আমি এই জীবনটা নিতে পারছি না।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন।
স্বাআলো/এস