আজাদুল হক, বাগেরহাট: কর্তব্যে অবহেলার কারনে বাগেরহাটের ফকিরহাটে অবস্থানরত দেশের একমাত্র সরকারী মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে ভারত থেকে আনা ১০টিসহ মোট ২১টি মহিষের বাচ্চার মৃত্যুর ঘটনা উদঘাটনে অবশেষে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সোমবার খামার পরিদর্শণ এবং খামারে কর্মচারীদের কাছ থেকে মহিষের মৃত্যু সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য গ্রহন করেছে। চরম অনিয়ম এবং কর্তব্যে অবহেলার কারনে এই মহিষ খামারে গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২১টি বাচ্চা মহিষ মারা যায় । এর মধ্যে ১০টি ভারত থেকে আনা ও ১১টি এই খামারের বাচ্চা মহিষ। দেশে দুধের চাহিদা মেটাতে ২০২৩ সালে ভারত থেকে তিন দফায় ১৪৯টি পূর্ন বয়স্ক মহিষ ও ১২০টি বাচ্চা মহিষ আনা হয় বাগেরহাট মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে। অভিযোগ উঠে খামারে কর্মরতদের জবাবদিহিতা না থাকায় দায়িত্বে অবহেলার কারনে এ বাচ্চা মহিষ গুলির মৃত্যু হয়েছে। কি কারণে খামারে মহিষের বাচ্চাগুলো মারা যায়, সে বিষয়ে জানতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালককে চিঠি দেয়। চিঠির উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির প্রধান প্রাণি সম্পদ অধিদফতর খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ আহসান কমিটির অপর সদস্যদের নিয়ে সোমবার সরেজমিন ওই খামার পরিদর্শন করেন। এ সময় মাটি চাপা দেয়া স্থান খুড়ে মহিষের বাচ্চার হাড়গোড় দেখতে পান।
খামার এলাকার বাসিন্দা অলীপ দাস বলেন, দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটিতে দায়িত্ব অবহেলার কারনে মহিষের বাচ্চাগুলো মারা গেছে। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারন উল্লেখ না থাকা বিষয়টি হাস্যকর। আমরা চাই খামারটি যাতে সঠিক ভাবে পরিচালিত হয় সে ব্যাপারে সরকার আন্তরিক হবে। তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব অবহেলা ও অনিয়ম দূর্নীতির কারণে খামারটি মুখথুবড়ে পড়ছে, সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান অসিম দাস।
বাগেরহাট মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারি পরিচালক ডা. আহসান উদ্দিন প্রামানিক কর্তব্যে অবহেলার কথা অস্বীকার করে
কোরবানির পশু কেনার আগে খেয়াল রাখতে হবে যেসব বিষয়
বলেন, মহিষগুলি ভারত থেকে দীর্ঘ সড়ক পথে ৭দিন সময় লেগেছে খামারে পৌছাতে এ কারণে কিছু মহিষের বাচ্চা দূর্বল হয়ে পড়ে ও শীতের প্রকোপে মহিষের বাচ্চাগুলো মারা গেছে। আর তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা.নুরুল্লাহ আহসান বলেন, খামারের ভিতরে মাটিচাপা দেয়া মৃত মহিষের বেশ কয়েকটি দেহাবশেস পযবেক্ষন করা হয়। খামারে কর্মচারীদের কাছ থেকে মহিষের মৃত্যু সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান। বর্তমানে বাগেরহাটের ফকিরহাটের এই মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে ৪৭০টি মহিষ রয়েছে।
স্বাআলো/এস/বি