নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৯ মে) ভোরে শহরের দেওভোগে তার বাসভবন ‘চুনকা কুটির’ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদি গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ডা. আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চারটি এবং ফতুল্লা থানায় একটি মামলা রয়েছে। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল আইভীর বাসভবন ‘চুনকা কুটির’-এ প্রবেশ করে। আইভীর গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সমর্থক, স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়ির রাস্তায় নেমে আসেন। এতে পুরো এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উত্তেজিত জনতা আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার প্রধান চারটি রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এসময় আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে আইভীর বাড়ির দিকে সমবেত হওয়ার আহবান জানানো হয়।
বন্ধুকে ‘ছাত্রলীগ’ পরিচয় দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে হবু স্ত্রীকে ধর্ষণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেফতার
গ্রেফতারের আগে সাংবাদিকদের কাছে ডা. আইভী বলেন, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলায় যদি আমার শাস্তি হয়, তাহলে আমি তা মাথা পেতে নেব। আমি কোনো অন্যায় করিনি, চাঁদাবাজি করিনি, হত্যা করিনি। যখন নারায়ণগঞ্জের একটা মানুষও কথা বলতো না, প্রতিবাদ করতো না, তখন ত্বকী হত্যার প্রতিবাদসহ সব প্রতিবাদ আমি করেছি। আমি আপনাদের সেবা দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আপনারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, নতুন সরকার এসেছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি, তাহলে কেনো আমাকে গ্রেফতার করা হলো, সরকারের কাছে জানতে চাই। আমার ভাইকে আমরা হারিয়েছি এক মাসও হয়নি, আমার তিনটা ছেলে-মেয়ে। এমন অবস্থায় আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, পালাইনি, তবে কেন এই গ্রেফতার?
এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্বাআলো/এস