ভারতে ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনলাইন সাইটে জুয়া পরিচালনা হচ্ছে। এখানে টার্গেট করা হচ্ছে উঠতি বয়সীদের।
আর এই জুয়া পরিচালনা করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অনলাইনের এসব জুয়ার আসরের মাধ্যমে গত তিন মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। পরে সেই অর্থ পাচার করা হয়েছে প্রতিবেশী দেশে।
সম্প্রতি গাজীপুর ও রাজধানীর মালিবাগে অভিযান চালিয়ে অনলাইন জুয়ার বাংলাদেশি এজেন্ট নিশাত মুন্নাসহ চারজনকে গ্রেফতারের পর এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, নিশাত মুন্না একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। তিনি অনলাইনে জুয়ার আসর বসে এমন একটি সাইটের বাংলাদেশি এজেন্ট। মুন্নাকে ওই সাইট পরিচালনায় সহযোগিতা করতেন আরো ৬ থেকে ৭ জন সদস্য। মুন্না ইউটিউবে জুয়া সংক্রান্ত ভিডিও বানাতেন। বিনিময়ে প্রতিটি ভিডিওর জন্য ১০ হাজার টাকা নিতেন তিনি। এভাবে তরুণদের টার্গেট আকৃষ্ট করে প্রথমে তাদের একাউন্ট খুলে দিতেন বাকি সদস্যরা। বিনিময়ে নিতেন ৩০০ টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল-মঈন।
গ্রেফতাররা হলেন, চক্রের মূলহোতা নিশাত মুন্না (২০), তার সহযোগী কামরুল ইসলাম শুভ (২৭), সুমন (৩৫) ও নাজমুল হোসেন বাবু (৩১)।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৬টি মোবাইল, ১৮টি সিমকার্ড, ১টি সিপিইউ ও ১টি মনিটর জব্দ করা হয়েছে।
খন্দকার আল-মঈন জানান, ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হয় এসব জুয়ার সাইট। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা পাচার করেছে গ্রেফতাররা। মূলত ফুটবল বিশ্বকাপ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ, আইপিএল, বিপিএল ও বিভিন্ন ফুটবল লিগ/টুর্নামেন্ট ও অন্য খেলাকে কেন্দ্র করে উঠতি বয়সীদের টার্গেট করে অনলাইন জুয়ার প্রচার করতো। এরপর আগ্রহীদের বিভিন্ন সাইটের একাউন্ট খুলে দিতো। পরে তাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিং ও হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার করতো। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন অ্যাপস এবং ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিলেও গ্রেফতাররা ডোমেইন পরিবর্তন করে আবারো সেই প্লাটফর্মগুলো চালু করতো। নামে বেনামে সিম সংগ্রহের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতো। পরে সেখান থেকে নিজেদের কমিশন রেখে বাকি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার করতো।
স্বাআলো/এসএ