চাকরি

দশম গ্রেড পাচ্ছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | July 15, 2025

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড উন্নীত করার একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে সরকারের বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে ৩৪১ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪০ টাকা।

ডিপিই থেকে পাঠানো প্রস্তাবটি এখন যাচাই-বাছাই শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অফিস আদেশ জারি করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশনস) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “রবিবার প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে রিট আবেদনকারী ৪৫ জন শিক্ষক ছাড়াও দেশের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড উন্নীত করা সম্ভব হবে।”

কবে নাগাদ এটি বাস্তবায়ন হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করছি।”

২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিতদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে, যা শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্যের অনুভূতি তৈরি করে।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন শিক্ষক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট শিক্ষকদের পক্ষে রায় দেন। পরবর্তীতে সরকার আপিল করলে গত ১৩ জুন আপিল বিভাগও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করে অফিস আদেশ জারি করে।

বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ৬৫ হাজার ৫০২টি, যার মধ্যে ৩২ হাজার ৩৫২ জন কর্মরত রয়েছেন। নতুন এই প্রস্তাবনা পাস হলে কর্মরত সকল প্রধান শিক্ষকই দশম গ্রেডের সুবিধা পাবেন।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo