লালমনিরহাটের তিস্তা চরাঞ্চলের নারী-পুরুষরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। গেলো বন্যায় ভারত থেকে কাঁদাযুক্ত পানি এসে তিস্তার বালুচরে পলি জমেছে। আর এতেই ভাগ্য খুলেছে চরবাসীর।
ভারতের উত্তর সিকিমের হিমালয় পর্বতমালা থেকে উৎপত্তি তিস্তা নদী লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারেজ হয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডার ও কাকিনা ইউনিয়ন, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন দিয়ে কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ অংশে এই তিস্তা নদীর দৈর্ঘ্য ১১৫ কিলোমিটার। শুষ্ক মৌসুমে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠে চর।
কিছুদিন আগেও যে তিস্তা নদীতে ছিলো পানিতে থৈ থৈ। সেই প্রমত্তা তিস্তা এখন ধু ধু বালু চর। আর নদীর বুক চিরে জেগে উঠা চর এখন সবুজের সমারোহ। বালু চরে আলু, পেয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়া নানা সবজি রোপণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের কৃষকরা। ব্যাপক পরিসরে চাষাবাদ হওয়ায় চরের কর্মহীন নারী পুরুষদের সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান।
সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তা চরের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, তিস্তায় জেগে ওঠা জমিতে প্রচুর পলি জমেছে। যা চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী। তাই তিনি এবার এক একর জমিতে আলু আবাদ করেছেন।
একই এলাকার কৃষক জলিল মিয়া বলেন, তিন বিঘা জমিতে তিনি প্রতিবছর পেয়াজ ও রসুন আবাদ করেন। কিন্তু এবার পলি জমে মাটি ভালো হাওয়ায় তিনি দেড় একর জমি বর্গা নিয়ে আলু আবাদ করেছেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কৃষি আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে তিস্তা চরে আলু, পেয়াজ, রসুন ও ভুট্টা বেশি আবাদ হয়। জেলায় এবার ১২শত হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান জানান, তিস্তায় জেগে উঠা চরগুলোতে এবার বেশি পরিমাণে পলি জমায় ধান ও ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও আলু, পেয়াজ, রসুন ও মিষ্টি কুমড়ার ফলনও ভাল হবে। এজন্য কৃষি অফিস থেকে চরাঞ্চলের কৃষকদের পরামর্শ ও বিনামূল্যে বীজ দেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
স্বাআলো/এসএ