সম্পদকীয়: পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজধানীর গুলশানে একজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দায় তিনজন, পঞ্চগড়ে দুইজন, খাগড়াছড়ির গুইমারায় দুইজন এবং নরসিংদীতে দুইজন। বেশিরভাগই মারা যান মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। অন লাইন নিউজ পোর্টাল স্বাধীন আলো এ খবর প্রকাশ করেছে।
স্বজন হারানোর বেদনা কতটুকু তা যারা এ ব্যথায় ব্যথিত তারা ছাড়া আর কেউ অনুভব করতে পারবে না। যদি স্থানীয় জনতা উত্তেজনা বশত ওই ঘাতক গাড়িগুলো ভাঙচুর করে বসতো তাহলে পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতো। ভাঙচুরের অপরাধে পুলিশ মামলা করতো এলাকার সাধারণ নিরীহ মানুষের নামে। মানুষ খুন করেও পরিবহন শ্রমিকরা শেষমেষ পার পেয়ে যেত এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে হচ্ছেও তাই। তারা জোর গলায় বলবে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একা শ্রমিকরা দায়ী নয়। এ জন্য পথচারীরাও দায়ী। যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার যে কারণগুলো চিহ্ণিত করেছে তার প্রায় সবগুলোর জন্য চালকরা দায়ী। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই পরিবহন শ্রমিকদের কথা ঠিক হলে সারা বিশ্বের অন্যন্য দেশেও বাংলাদেশের মতো সড়ক দুর্ঘটনা হতো। কিন্ত সেটা কি হয়? ওই সব দেশের শ্রমিকদের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা আছে।
আমাদের দেশে এ সব কিছুই নেই। এ কারণে ফ্রিস্টাইলে ঘটে চলেছে সব কিছু। জাপানে দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে নিহতের পরিবারের ভোরণ-পোষণ ওই পরিবহন শ্রমিককে বহন করতে হয়। এমন কঠোর আইনের মত কোনো আইন বাংলাদেশে চালু না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন শ্রমিকরা নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
ট্রেড ইউনিয়নের নামে তারা য়ে অরাজকতা সৃষ্টি করে তা কোনোক্রমেই সমর্থন যেগ্য নয়।
দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। পর্যালোচনায় দেখা গেছে ৬০ ভাগ চালক হেলমেট ব্যবহার করছে না। এছাড়া বেশিভাগ পথচারী রাস্তা পারাপারে সতর্ক অথবা সচেতন নয়। দুর্ঘনার এটাও একটি অন্যতম কারণ। এ ছাড়া ক্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের ড্যামকেয়ার মানসিকতা অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, সড়ক আইন মেনে না চলা এসব দুর্ঘটনার কারণ। দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনতে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ, চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্টকরণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশসগুলো কার্যকর করতে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হোক।
স্বাআলো/এস