নড়াইলে লোহাগড়ায় পাওনা টাকা আনতে গিয়ে দোকানদার এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে। এই ঘটনার সালিশে জরিমানার বাকি টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ইউপি সদস্যসহ আরো দুইজনে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ এই ব্যাপারে থানায় মামলা করেছেন।
যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইউপি সদস্যসহ তিনজনকেই আটক করেছে।
২৭ জুলাই ও ৪ আগস্ট লোহাগড়ার চাকুলিয়া হাটমিঠাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলো, চাকুলিয়া হাটমিঠাপুর গ্রামে বাবু মোল্যা (৪৫), রাব্বি (২৫) ও রাসেল মোল্যা (৪৫)।
পিবিআই যশোরের পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক জানিয়েছেন, আসামি বাবু মোল্যা ও বাদীর বাড়ি পাশাপাশি। বাদীর স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী। বাদীর স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। বাড়ির পাশে বাবুর একটি মুদিখানার দোকান আছে। অভাবের সংসারে বাবুর দোকান থেকে নগদ ও বাকিতে ক্রয়-বিক্রয় করেন বাদী। এরই মধ্যে বাবুর কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা ধার দিয়েছেন বাদী। সময় মতো ধারের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ২৭ জুলাই রাত ৮টার দিকে বাবু তার বাড়িতে যান। পাওনা টাকা না দেয়ায় ঘরের মধ্যে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এসময় বাদীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এলে বাবু উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে বাদীর শ্বাশুড়ি বাড়িতে এসে এই বিষয়ে থানায় মামলা করবেন বলে একই গ্রামের ইউপি সদস্য রাসেল মোল্যাকে জানান। রাসেল মোল্যা বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার জন্য বাদী ও তার শ্বাশুড়িকে আশ্বাস্ত করেন। পরে সালিশ করে বাবু মোল্যাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন মেম্বর রাসেল মোল্যা। ওই সময় জরিমানার দুই লাখের মধ্যে ৭৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন বাবু। কিন্তু ৭৪ হাজারের মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার টাকা বাদীকে দেন রাসেল মেম্বর। বাকি টাকা দেয়া হবে বলে কয়েকদিন রাসেল মেম্বর বাদীকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন। ৪ আগস্ট বাদীর মোবাইলে কল করে চাকুলিয়াহাট মিঠাপুর বলাডাঙ্গা ব্রিজের উপর গিয়ে বাকি টাকা আনার জন্য যেতে বলেন মেম্বর রাসেল। সেখানে যাওয়ার পরে অপর আসামি রাব্বি একটি মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিলো। এসময় রাসেল বাদীকে রাব্বির মােটরসাইকেলে নড়াইলে গিয়ে টাকা নেয়ার জন্য বলেন। নড়াইলে একটি অপরিচিত বাড়িতে আটকে রেখে ৫ আগস্ট ভোর পর্যন্ত বাদীকে ধর্ষণ করে রাসেল মেম্বর। ৫ আগস্ট ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাসেল মেম্বর চলে যায় কিন্তু রাব্বি তাকে আবারো ধর্ষণ করে। এরপরে রাসেল মেম্বরের মোটরসাইকেলে করে বাদীকে তার শ্বশুর বাড়ির পাশে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এই বিষয় জানাজানি হলে বাদী লোহাগড়া থানায় মামলা করেন। পাশাপাশি মামলার কপি নিয়ে পিবিআই যশোর অফিসে অভিযোগ করেন। পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক ও এসআই সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ। বুধবার বাড়ি থেকে ওই তিনজনকেই আটক করে নড়াইল আদালতে সোপর্দ করেছে।
স্বাআলো/এস