মানবিক করিডোর নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি: নিরাপত্তা উপদেষ্টা

ঢাকা অফিস

গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মানবিক করিডোর স্থাপনের বিষয়ে সরকার কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।

রবিবার (৪ মে) রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা স্পষ্ট করেন।

ড. খলিলুর রহমান বলেন, মানবিক করিডোর নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। এটি নিয়ে কেবল প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে।

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে শান্তি সম্ভব নয়

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আমেরিকার হয়ে আরাকানে প্রক্সি যুদ্ধ শুরু করছে এমন গুজব কিছু প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যম ছড়াচ্ছে, যা কখনো কাম্য নয়।

নিরাপত্তা উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের কখনোই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। যদি সেটা করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ হবে প্রতিবেশী দেশগুলোর ডাম্পিং গ্রাউন্ড।

সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রাখাইনে মানবিক করিডোর দেয়ার বিষয়ে বলেছিলেন, নীতিগতভাবে আমরা এতে সম্মত। কারণ, এটা হিউম্যানিটেরিয়ান প্যাসেজ (মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ) হবে। কিন্তু আমাদের কিছু শর্ত রয়েছে… সেই শর্তাবলি যদি পালিত হয়, আমরা অবশ্যই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।

মাগুরায় ৬ রোহিঙ্গা আটক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয় এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রশ্ন সামনে আসে। এর কয়েকদিন পরই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত মানবিক করিডোর নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি এবং রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়নি। তবে তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের নেতৃত্বে এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে।

এদিকে, বুধবার ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর একজন মুখপাত্র জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাংলাদেশ হয়ে করিডোর ব্যবহার করে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে গেলে জাতিসংঘকে অবশ্যই বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এই শর্ত পূরণ না হলে জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ সীমিত।

ড. খলিলুর রহমানের রবিবারের বক্তব্য করিডোর সংক্রান্ত পূর্ববর্তী আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনার প্রেক্ষিতে সরকারের সর্বশেষ অবস্থান স্পষ্ট করলো।

স্বাআলো/এস