কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবি: ১৬ ঘণ্টা পার, আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা, তাকিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে

0
56

খুলনা ব্যুরো: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন ১৬ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে।

সোমবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এই অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছেন। দাবি পূরণে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন।

সোমবার (২১ এপ্রিল) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ৩২ জন শিক্ষার্থী ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় তারা অবস্থান নেন এবং বাকি শিক্ষার্থীরা তাদের চারপাশে অবস্থান করে সংহতি প্রকাশ করেন। তবে, এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থী অসুস্থতার কারণে এবং আরেকজন অভিভাবকের অনুরোধে অনশন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে ৩০ জন শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভিসি পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন শুরু

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দফতর এবং শিক্ষকরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার সকাল থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়ে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ করেন। তারা সংবাদ সম্মেলন করেও আলোচনার আহ্বান জানান এবং পরে অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে তারা ফিরে যান, তবে আলোচনার দরজা খোলা আছে বলে জানান। রাতেও ছাত্র কল্যাণ দফতরের পরিচালকসহ শিক্ষকরা পুনরায় শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে আসেন এবং আলোচনার প্রস্তাব দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের এক দফা দাবিতে অনড়।

অনশনরত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (সিই) বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের এক দফা, এক দাবি – ভিসির পদত্যাগ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে, প্রয়োজনে এখানেই আমাদের মৃত্যু হবে।

দাবিতে অনড় কুয়েট শিক্ষার্থীরা, আজ থেকে আমরণ অনশন

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে তাকিয়ে আছি। গত দুই মাস ধরে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। আমরা রাস্তা বা রেললাইন অবরোধ করিনি। শান্তিপূর্ণ থাকার জন্যই কি সরকার আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না?

তিনি আরো উল্লেখ করেন, আলোচনার প্রস্তাব আসার আগেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও বহিষ্কারের মতো দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা তাদের দাবি থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্তকে আরও দৃঢ় করেছে।

শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি– ভিসির পদত্যাগ। যতক্ষণ পর্যন্ত এই দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততক্ষণ তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

স্বাআলো/এস