নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে বাড়ি দখল, মারামারি, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। শহরের পুরাতন কসবা এলাকার তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী মাসুম হোসেন সিদ্দিকি ও শরিফা আক্তার পিয়া দুইজনেই বাদী হয়ে আদালতে দায়ের করা মামলা থানা পুলিশ রেকর্ড করেছে।
এরমধ্যে বাদী শরিফা আক্তার পিয়ার মামলায় পুরাতন কসবা চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকার আরশাদ হোসেন সিদ্দিকীর ছেলে এবং বাদীর তালাকপ্রাপ্ত স্বামী মাসুম হোসেন সিদ্দিকি ও মেয়ে অঞ্জুলা বেগম এবং ঢাকা রোড এলাকার মশিয়ার রহমানের ছেলে রেজাউল হক পলাশ।
অপরদিকে মাসুম হোসেন সিদ্দিকের মামলার আসামি বাদীর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার শফি মিয়া ওরফে মন্টু মিয়ার মেয়ে শরিফা আক্তার পিয়া, দুই ছেলে মোমিমুন রহমান বিপুল ও শাহানুর রহমান টুটুল।
বাদী শরিফা আক্তার পিয়ার মামলায় বলেছেন, বাদী এবং বিবাদী তালঅকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী হলেও তারা পারিবারিকভাবে একে অপরের আত্মীয় হন। কানাডিয়ান প্রবাসী মাসুম হোসেন ২০১৫ সালে শরিফা আক্তার পিয়াকে বিয়ে করেন। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর পিয়া তার স্বামী মাসুমকে তালাক প্রদান করেন। তালাক হলেও পিয়া তার নিজস্ব বাড়ি শহরের পুরাতন কসবা চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ড এলাকার জেরিনা ম্যানসনে বসবাস করেন। মাসুম হোসেন এতে ক্ষীপ্ত হয়ে পিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা করেন। পাশাপাশি পিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য মাসুম নিজস্ব সন্ত্রাসী ভাড়া করে বিভিন্ন সময় হামলা ও মারপিট করেন বলে বাদী জানিয়েছেন। আর তারই জের ধরে গত ১৫ জুলাই গভীর রাত ৩টার দিকে মাসুম হোসেন সিদ্দিকী, তার বোন অঞ্জুলা বেগম এবং রেজাউল হক পলাশসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীদের সাথে পিয়ার বাড়িতে প্রবেশ এবং মারধর করে টাকা ও সোনার গহনা লুটপাট করে। এরপরে পিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিচারক সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি আগামি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
অপরদিকে মাসুম সিদ্দিকীর মামলায় বলেছেন, তিনি কানাডিয়ান প্রবাসী। তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী এই মামলার আসামি শরিফা আক্তার পিয়ার পরকীয়ার কারণে সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে বাদী মাসুমের বিরুদ্ধে মামলা করায় তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। গত ১৪ জুলাই রাত ১১টার দিকে পিয়াসহ তার দুই ভাই এবং সহযোগি অন্য কয়েকজনকে নিয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে দেয়াল ভাঙ্গাসহ নানা ধরণের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে। বাধা দিলে বাদীর বড় বোন অঞ্জুলা বেগমকে মারপিট করে তার পরনে থাকা দুই লাখ টাকার সোনার গহনা এবং বাদী মাসুমের পকেটে থাকা ৫০ হাজার ছিনিয়ে নেয়। এরপরে অঞ্জুলাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ব্যাপারে থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোয় ২৫ জুলাই আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। বিচারক সিমনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি আগামি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
স্বাআলো/এস