কৃষক বাঁচাতে শস্যবিমা চালুর বিষয়টি ভাবা যেতে পারে

| June 12, 2024

সম্পাদকীয়: প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষককে আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য শষ্য বীমা চালু আজ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি সংগঠনের যশোর জেলা শাখা এ দাবিতে কৃষি মন্ত্রীর কাছে বছর চারেক আগে স্মারকলিপি দিয়েছিলো। কিন্তু তারপর কোন পক্ষেরই কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। এ দিকে চলতি বছর অল্প বৃষ্টি বর্ষণ ও পোকার আক্রমণের কারণে কৃষকের ধান উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। কিন্তু বরাবরের মতো এবারো কৃষককে উৎপাদন থেকে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফসলহানীর ক্ষতি থেকে কৃষককে রক্ষার জন্য শস্য বীমা চালু করার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে।

জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পানি করে কৃষক ফসল ফলায়। আর সেই ফসলে দেশের মানুষের ক্ষুধা মেটায়, জীবন বাঁচায়। কিন্তু যারা এই মহৎ কাজটি করে তাদের লাভ-ক্ষতি, বিপদ-আপদ, দুর্যোগ-দুর্বিপাক, সমস্যা-সংকট নিয়ে ভাববার একটি মানুষও নেই এ দেশটিতে। আর তাই তারা দেশের মানুষের মুখে ক্ষুধার অন্ন তুলে দিয়ে নিজেরা সারা বছর অভূক্ত থাকে। কৃষকের হাতে নগদ টাকা থাকে না তাই ফসল উৎপাদনের সময় তাকে মহাজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে আবাদ করতে হয়। আশার ফসল যখন সোনা হয়ে কৃষকের হাতের মুঠোয় আসবো আসবো করে তখন একটা না একটা বিপর্যয় এসে সব আশা নিরাশায় পরিণত করে দিয়ে যায়। এ ধরনের কোনো না কোনো ক্ষতির শিকার হয়। আর এমন অবস্থার মুখোমুখি হয়ে ফসলের দর পতন মেনে নিয়ে ক্ষতির বোঝা মাথায় নিয়ে বিক্রি করে মহাজনের দেনা শোধ করে ফসলের উঠতি মৌসুমেও তাকে ফসলহীন অবস্থায় থাকতে হয়।

দেশের ব্যবসা বাণিজ্যসহ সব ঝঁকিপূর্ণ কাজে বীমা ব্যবস্থা আছে। কিন্তু জাতির মেরুদন্ড বলে হাস্যকর যে বিশেষণটি কৃষক শব্দটির আগে জোড়া হয় তাদের কাজ শত ঝুঁকিতে ভরা থাকলেও বীমা অথবা বীমার মতো কোনো ব্যস্থা নেই। তাদেরকে বীমার আওতায় আনা যায় কিনা তা ভেবে দেখা যেতে পারে।

আমাদের মূল কথা হলো কৃষকদের আর এভাবে ক্ষতির মুখে ফেলে রাখা যাবে না। যে কোনো একটা পথ বের করতেই। আর এ জন্য উদ্যোগটা আগে নিতে হবে সরকারের পক্ষ থেকে।

স্বাআলো/এস/বি