রংপুর ব্যুরো: অবশেষে আইআরডিপির (ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) প্রধান নির্বাহী মোস্তফা কামাল রাসেলসহ তার সহযোগী ১২ জনের নামে পুলিশ বাদী হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছে। ওই মামলার পর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তার সহযোগী আওয়ামী লীগ জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য ওমর ফারুককে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
শনিবার রাতে তাদের দুইজনকে নগরীর নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে রংপুর নগরীর গোমস্তাপাড়ায় ওই সংস্থাটির অফিসে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের নামে মামলা করে ডিপি পুলিশ। তাবে মামলায় সংস্থার চেয়ারম্যান আশেক আলীকে অজ্ঞাত কারণে মামলায় আসামি করা হয়নি।
মামলাটি রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানায় করা হয়। মামলার বাদী ডিবি ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান। মামলার পর মোস্তফা কামাল রাসেল ও ওমর ফারুককে গ্রেফতার হরা হলো। এ নিয়ে ওই মামলায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয় ‘আইআরডিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল রাসেলসহ তার সহযোগীরা মিলে ২০২২ সাল থেকে রংপুর নগরীর গোমস্তপাড়ায় অধ্যাপক ডা. আলাতাফ হোসেনের বাড়ির নিচ তলায় ভাড়া নিয়ে ওই সংস্থার নামে প্রতরণার ফাঁদ পাতেন। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হতে পারেননি সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল রাসেল। তিনি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা অফিসের পিয়ন হিসাবে চাকরি করেতেন। তারা বাবা গোলাপ হোসেন মণ্ডল ওই অফিসের পিয়ন পদে কর্মরত আছেন। তার এনআইডিতে দেখা গেছে, তার বাড়ি ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি পূর্ব ছালুয়া গ্রামে। তার প্রথম স্ত্রী মুনমুন পারভীন সংস্থার সহসভাপতি। দ্বিতীয় স্ত্রী ধর্মান্তরিত মনি রানী। তিনি রংপুর তারাগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী হিসাবে কর্মরত আছেন।
জানা গেছে, মোস্তফা কামাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে ঠিকাদারি কাজের নামে ইউনিয়ন সরকারি ও বিদেশি দাতা সংস্থার অর্থায়নে সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা ব্যয়ে হেলথ কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা বলে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয় তিনি এর আগে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলায় সরকারি বরাদ্দকৃত ১০ টন অনুদানের চাল আত্মসাৎ করার দায়ে বগুড়া জেলা আদালতে মামলার আসামি। তার আগে গাইবান্ধা জেলায় ফুলছড়িতে একই সংস্থায় নামে প্রতরাণার দুইটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। একটিতে তার এক বছরের জেল ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন গাইবান্ধা জেলা যুগ্ম ও দায়রা জজ প্রথম আদালত।
এসব মামলার পলাতক আসামি হিসাবে তিনি রংপুর নগরীতে গুপ্তপাড়ায় এক সেনা কর্মকর্তার বাসায় ভাড়া থাকতেন। ওই বাসায় রংপুর র্যাব-১৩ এর এক কর্মকর্তাও ভাড়া থাকেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল জানান, তার কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন র্যাবের প্রধানের এক ভাই। তিনি তার প্রকল্পের প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের কার্যাদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে রংপুর সিটি করপোরেশনের একটি ক্যানেল খনন কাজের জন্য দরপত্র আহবান করে প্রায় ১১০ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আজম আলী জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো দরপত্র সিটি করপোরেশন আহবান করেনি। কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে থাকেন তার সঙ্গে আমাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই।
স্বাআলো/এস