Uncategorized

যশোরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২

| March 22, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের গোবিলা গ্রামে যুবলীগ নেতা শিমুল হোসেন (৪০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ মুল হত্যাকারী একই গ্রামের বুলবুল ও নাঈম হোসেনকে আটক করেছে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে তাদের আটক হয়।

এদিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বাদ আছর জানাযা শেষে গোবিলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

মাদক সেবনে বাধা প্রদান ও পরকীয়া প্রেমের কারণে শিমুলকে খুন করা হতে পারে বলে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।

যশোরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

তবে পুলিশের দাবি আটকৃতদের জিজ্ঞাসাদে খুনের আসল কারণ জানা যাবে। রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। এদিকে শিমুল হত্যার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গোবিলা গ্রামের জামির হোসেনের ছেলে বুলবুল হোসেন ও হযরত আলীর ছেলে নাঈম হোসেন র্দীঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রকারের নেশা করে এলাকার পরিবেশ নষ্ঠ করে আসছে। এ ঘটনায় একই গ্রামের মকলেছুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে জিল্লুর রহমান শিমুল এ বিষয়ে তাদের একাধিকবার নিষেধ করে। সর্বশেষ ঘটনার দিন বিকেলে নিহত শিমুলের সাথে বুলবুল ও নাঈমের স্থানীয় গোবিলা বাজারে প্রকাশ্যে নেশা না করার জন্য বকাবকি করে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা এ ঘটনায় বুলবুল ও নাঈমের নেতৃত্বে শিমুলকে রাতে একা পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করতে পারে।

অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিমুলের সাথে বুলবুলের স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম ছিলো বলে এলাকায় চাউর রয়েছে। ঘটনাটি জানতে বুলবুল জানতে পেরে একাধিকবার তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ বা কথা বলতে নিষেধ করে শিমুলকে। বুলবুলের কথা অমান্য করে তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ রেখে চলে শিমুল। বুলবুল এই ঘটনাও ক্ষিপ্ত হয়ে নাঈমকে সাথে নিয়ে শিমুলকে খুন করতে পারে।

এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, নেশা না করার জন্য শিমুল বৃহস্পতিবার বিকেলে গোবিলা বাজারে বুলবুল ও নাঈমকে প্রকাশ্যে শাসানোর কারণে তার উপর ক্ষিপ্ত হয় তারা। তারা দুইজন মিলে এক সাথে গাঁজা সেবন করে সন্ধ্যার পর শিমুলের গতিবিধি লক্ষ্য শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে তারা দুইজন গোবিলা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এলাকার সেরেকুলের বাড়ির নিকট পৌঁছালে তারা শিমুলের উপর চড়াও হয়। প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায় তারা। ওইসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিমুল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার সাইফুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে নিহতের স্ত্রী নাসরিন বেগম জানিয়েছেন, এলাকার পরিচিত লোকজনই তাকে হত্যা করেছে। শুধু রাজনীতি করার কারণেই এই খুন হয়নি। এলাকায় মাদক ও অনিয়ম অপরাধের বিরুদ্ধে সে সব সময় সোচ্চার থাকায় অপরাধীরা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তার স্বামীর। তিনি জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। এদিকে শুক্রবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে বাদ আছর স্থানীয় গোবিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাযার পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তার জানাযায় চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন দফাদারসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সেলিম হোসেন জানিয়েছেন, ঘটনার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মুল আসামি বুলবুল ও নাঈমকে আটক করেছে। তবে কি কারণে শিমুলকে খুন করা হয়েছে তা আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। বর্তমানে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানিয়েছেন, জিল্লুর রহমান শিমুল হত্যাকাণ্ডে বুলবুল ও নাঈমকে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে শুক্রবার আটক করা হয়েছে। হত্যার কারণও সহযোগী অন্যদের নাম ঠিকানা সংগ্রহের জন্য আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্বাআলো/এস

Debu Mallick