জাতীয়

আহত জুলাই যোদ্ধারা পাবেন ১২৫০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | July 15, 2025

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে (জুলাই আন্দোলন) অংশ নিয়ে কর্মক্ষমতা হারানো যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৫৬০ জন যোদ্ধাকে ১,২৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। এজন্য ‘ঢাকার মিরপুর ৯নং সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে-২০২৪-এ কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধা পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।

১ হাজার ৩৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলে চলতি মাস থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পের প্রেক্ষাপট ও লক্ষ্য

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল বাসির জানিয়েছেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জুলাই বিপ্লব দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের ন্যায্য অধিকারের একটি মাইলফলক। এই বিপ্লবের মাধ্যমে একটি নতুন গণতান্ত্রিক যুগের সূচনা হয়েছে। তাই সরকার এই আন্দোলনে আহত যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুযায়ী, মিরপুর হাউজিং এস্টেটে ডিওএইচএস-সংলগ্ন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে এই ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের পর্যবেক্ষণ ও আপত্তি

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবটি পাওয়ার পর গত ৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পটি নিয়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ ও আপত্তি তুলে ধরা হয়।

সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ঘাটতি: সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্পে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই প্রকল্পে তা করা হয়নি। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নিজস্ব অর্থায়নে এই সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে।

ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন: প্রকল্পে সাপ্লাই অ্যান্ড সার্ভিসেস খাতে ৮০ লাখ, স্থাপত্য ড্রইং ও ডিজাইনে ৫০ লাখ এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ৩ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। পিইসি সভায় এসব খাতের ব্যয়কে যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারণ: বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়া হলেও এর আর্থিক মূল্য কত, তা প্রকল্পের হিসাবে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশন। তাই জমির মূল্যসহ এবং জমির মূল্য ছাড়া প্রতিটি ফ্ল্যাটের দাম প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিপিপির কাঠামো: উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সঠিকভাবে তৈরি করা হয়নি বলে সভায় উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক ব্যয়ের বিস্তারিত বিভাজন এবং লগফ্রেম যথাযথভাবে তুলে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, প্রকল্পে শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার জায়গা রাখা এবং ফ্ল্যাটে বাথরুমের সংখ্যা বাড়ানোর মতো বিভিন্ন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
পিইসি সভার সুপারিশ অনুযায়ী, উন্নয়ন প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য শিগগিরই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সংশোধন শেষে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo