সম্পাদকীয়: চুরি, ডাকাতি, রাহাজানী, ছিনতাই, খুন জখম, ধর্ষণ প্রতিনিয়ত ঘটছে। এসব নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো ভুমিকা না থাকায় মানুষ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। আর তাই গণমাধ্যমে প্রায় খবর ছাপা হয় এ সব অপরাধের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে গাজীপুরের কাপাসিয়ার নামিলা গ্রামে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে একজন ও বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে অপর একজনের মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতে চান মিয়ার বাড়িতে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে একজনকে ধরে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যজনকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানক্ষেতের আড়ালে লুকান। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে ধানক্ষেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই সেও নিহত হয়।
নিহত দুইটি আদম সন্তান যে গরু চোর বলে তার কোনো প্রমাণ নেই। তারপরো তাদেরকে হত্যা করা হলো। আইন হাতে তুলে নেয়ার এ বিষয়টিকে আমরা সমর্থন করিনে।
একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বিভিন্ন স্থানে চুরি-ডাকাতির অভিযোগে সন্দেহ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। আমরা উদ্বেগের সাথে বলতে চাই, চুরি, ছিনতাই বাড়লেও প্রশাসন নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় কি করে? যাদের সম্পদ লুট হচ্ছে তারা কি আর্থিকভাবে সুস্থ আছেন? প্রশাসন কি একটি বারের জন্য খোঁজ নিয়েছে? গ্রামের চাষা-ভুষা মানুষের সম্পদ চুরি হচ্ছে তার আবার খোঁজই বা নিতে হবে কি, আর চুরি প্রতিরোধে ব্যবস্থাই বা নিতে হবে কি?
আজ গাজীপুরে যে ঘটনা ঘটলো তা কিন্তু ঘটতে পারতো না যদি প্রশাসন সময় মতো ব্যবস্থা নিতো। এটি যে প্রশাসনের ব্যর্থতা তাতে কি সন্দেহ করার কোনো কারণ থাকতে পারে? এ কথা সত্য যে যখন আইনের শাসন থাকে না তখন বেআইনী কাজ ঘটে। আমরা বলবো মানুষের অশান্তির ঘটনা গ্রাম বা যেখানেই ঘটুক প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে আইন হাতে তুলে নেয়ার মতো ঘটবে না বলে আমরা মনে করি।
স্বাআলো/এসআর