চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছায় ভূমিদস্যূদের অবৈধ দখল থেকে ৪৩ বিঘার একটি জলমহাল উদ্ধার করেছে উপজেলা ও ভূমি প্রশাসন।
ভূমিদস্যূরা এমনকি জলমহালটির শ্রেণি (জলমহাল থেকে ধানী) পরিবর্তন করে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছিলো।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহানের নেতৃত্বে এই জলমহাল অবৈধদখলমুক্ত করে লাল পতাকা এবং সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস ও চৌগাছা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা পৌরসভার চৌগাছা মৌজার জে.এল. নং-১১ এর এসএ খতিয়ান নং- ৪০০, ৪১০, ১২৭৩, ১৬৪৬, ১৮৫৩, ১১৪৮, ৩১৭০, ২৭৬, ২৪৮, ২৬০২, ২৭৪, ১৮৮, ১৫৯৩, ৯৮০, ২৪৬১, ২৫৫২ ও ৪৬৪ খতিয়ানের এসএ দাগ নং-২২৯৩। যা আরএস খতিয়ান ০১ এর ২৭টি আলাদা দাগে ১৪.১০০ একর জমি জলমহাল হিসেবে ছিলো। এই জলমহাল দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে জোর পূর্বক দখলে রেখে মাছ চাষ করা হতো। শুধু দখলই নয়, এই জলমহালের জমি স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যূরা ভূমি অফিসের অসাধু কর্মচারীদের সহায়তায় রেকর্ড করে নেয়। একইসাথে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ধানী জমি হিসেবে নিজেদের নামে রেকর্ড করে তারা। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে ভূমি অফিস রেকর্ড সংশোধন করে জলমহালে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিসকেস করেন। এরপর অবৈধভাবে নিজেদের নামে দখলকারী ব্যক্তিরা দেওয়ানী মামলা করে। তবে মামলায় তারা আদালতে হেরে যায়। এরপরও অবৈধভাবে জলমহালটি দখলে রেখেছিলো ওই ভূমিদস্যূরা। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় জনসাধারণের তোপের মুখে অবৈধদখলদার ওই ভূমিদস্যূ চক্রটির এলাকাছাড়া হয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা সেটিতে মাছ চাষ করতে থাকেন। এদিকে মিসকেস ও দেওয়ানী মামলা নিস্পতি হয়ে যাওয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান জলমহাল দখলমুক্ত করে সরকারের দখলে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সোমবার িউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহানের নেতৃত্বে ওই জলমহালের চৌহর্দিতে লাল পতাকা গেড়ে এবং সাইনবোর্ড পুতে দিয়ে জমিটি সরকারের দখলে নেয়া হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান বলেন, জমিটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ভূমিদস্যূরা অবৈধভাবে রেকর্ড করে দখলে রেখেছিলো। মিস কেসের মাধ্যমে আমরা রেকর্ড সংশোধন করে খাস খতিয়ানে নিয়েছি। আজ সেটি দখলমুক্ত করা হলো। তিনি জানান, এখন জমিটির শ্রেণি পরিবর্তন করে আবার জলমহালে রূপান্তর করার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এরপর এটি ইজারা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে জমিটি দখলমুক্ত করা হলো। এটি আমাদের বড় অর্জন। এটি ধানী শ্রেণিতে আছে এখন এটির শ্রেণি পরিবর্তন করা হবে।
তিনি বলেন, অবৈধ দখলমুক্ত করে সরকারি সম্পদ ফিরিয়ে আনার জন্য এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্বাআলো/এস