বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

ঢাকা অফিস: দেশের বিভিন্ন স্থানে গত রবিবার ও আজ সোমবার বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় অন্তত ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কৃষক, কিশোর, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গৃহবধূ রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে কুমিল্লা জেলায়।

কুমিল্লায় ৪ জনের মৃত্যু:

রবিবার ও সোমবার মিলিয়ে কুমিল্লায় মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মুরাদনগর উপজেলার কোরবানপুর গ্রামে সোমবার সকালে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিখিল দেবনাথ (৫৮) ও জুয়েল ভূঁইয়া (৩০) নামের দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে, বরুড়া উপজেলার পয়েলগচ্ছ গ্রামে দুপুরে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রাহত হয়ে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) ও ফাহাদ (১৩) নামের দুই কিশোর মারা যায়। এসময় আবু সুফিয়ান (৭) নামে আরেক শিশু আহত হয়েছে, যাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরুড়া থানার ওসি কাজী নাজমুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

কিশোরগঞ্জে ৩ জনের মৃত্যু:

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার হাওরে সোমবার সকালে ধান কাটার সময় ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫) নামের দুই কৃষকের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন অষ্টগ্রাম থানার ওসি রুহুল আমিন। প্রায় একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে বাড়ির পাশে ধানের খড় শুকানোর সময় বজ্রপাতে ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হন বলে জানিয়েছেন মিঠামইন থানার এসআই অর্পন বিশ্বাস।

নেত্রকোনায় ২ জনের মৃত্যু:

নেত্রকোনায় রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলার ধনুন্দ গ্রামে রবিবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে বজ্রাহত হয়ে দিদারুল ইসলাম (২৮) নামের এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এদিকে, সোমবার সকালে মদন উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে মো. আরাফাত (১০) নামের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুনামগঞ্জ ও চাঁদপুরে ২ জনের মৃত্যু:

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে সোমবার সকালে গরুকে ঘাস খাওয়াতে গিয়ে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তিনি শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শাল্লা থানার ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ধান তোলার সময় বজ্রপাতের বিকট শব্দে বিশাখা রানী (৩৫) নামের এক গৃহবধূ মারা যান। কচুয়া থানার ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানিয়েছেন, বজ্রপাতের শব্দের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে (হার্ট অ্যাটাক) তিনি মারা গেছেন।

বজ্রপাতের এই আকস্মিক ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে ধান কাটার ভরা মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

হামলার পরিকল্পনা ভারতের, জবাব দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের...

কয়রায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কে অব্যাহতি

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি::বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম...

যশোরে নিখোঁজ কিশোরের লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলার রামনগরে নিখোঁজ হওয়ার একদিন...

বাগেরহাটে মুখে টেপ লাগানো যুবকের লাশ উদ্ধার

আজাদুল হক, বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় মুখে কসটেপ প্যাঁচানো...