পটুয়াখালীর গলাচিপায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে উৎসবের আমেজ। আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের ভেলা, আর দিগন্ত জুড়ে কাশফুলের মেলা, শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতেই মা দেবী দুর্গা ধরাধামে আবির্ভূত হন। সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার দূর করতেই এ পূজার আয়োজন।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা এবং সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী শেষে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে এ উৎসবের।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গলাচিপা পৌরসভার সকল হিন্দু পল্লীগুলোতে বাহারি সাজসজ্জা, আলোকেসজ্জায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে, ঘরবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বিভিন্ন আলপনার ছাঁপ ও নতুন কাপড় কেনাকাটা। দেবীর পূজা অর্চনা, প্রতিমা দর্শন, নানা রীতি নীতি পালন, আত্মীয় স্বজনের আগমনে মণ্ডপগুলোতে মানুষের ঢল, ঢাকের তালে আরতি আর উলুধ্বনিত মুখরিত হয়ে উঠেছে মণ্ডপগুলো।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি থেকে জানা যায়, এবার উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ২৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রবিবার (২২ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি মন্দির, সাহাবাড়ি মন্দির, পোদ্দারবাড়ী মন্দির, দাসবাড়ি মন্দির, উলানিয়া মন্দির, ডাকুয়া মন্দির, আটখালী মন্দির, পাংগাসিয়া মন্দির, চিকনিকান্দী মন্দির ঘুরে মণ্ডপে দেখা যায় ভক্তদের উপচে পড়া ভীড়। আরতি খেলা শিশু-কিশোরদের নাচানাচি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ গলাচিপা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও গলাচিপা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয় বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শুরু হয়েছে, কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সব সময় খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রতিবছরের মতো এবারো প্রতিটি মণ্ডপে সরকারি অনুদান দেয়া হয়েছে।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গায়েণ বলেন, কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি আনসার সদস্য ও গ্রাম পুলিশ রয়েছে এবং মূল পয়েন্টগুলোতে চৌকস অফিসার রয়েছে, টহল পুলিশ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো বিশৃঙ্খলার খবর শোনা যায় নি। আশা করছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা শেষ হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, সরকারিভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল ধর্মের মানুষের উৎসব পালনে সকল ধরণের নিশ্চয়তা প্রদান করেন। তিনি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে সকলে মিলে উৎসব পালনের পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ সকল ধর্মের প্রতি সম্প্রীতি ও সদ্ভাব বজায় রেখে চলে। তাই আপনারা সব সময় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে থাকবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় কালিবাড়ী কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দিলীপ বণিক, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন, পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম রেজা, চিকনিকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ, ডাকুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান বিশ্বজিত রায় প্রমুখ।
স্বাআলো/এসএস