Uncategorized

মে দিবস উপলক্ষে মাগুরায় সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল

| May 1, 2025

লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা

কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলো। কর্মসংস্থান নিশ্চিত কর। অবিলম্বে মাগুরা টেক্সটাইল মিল চালু কর। গ্রাম-শহরের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষকে আর্মি রেটে রেশন দাও। এসকল দাবিতে মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) চৌরঙ্গী মোড়ে প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদ মাগুরা জেলার উদ্যোগে সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাম গণতান্ত্রিক জোট মাগুরা জেলার সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্টলীগ মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিক্ষাবিদ কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মাগুরা জেলার আহবায়ক প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশ জাসদ মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি এটিএম মহব্বত আলী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এটিএম আনিসুর রহমানসহ অন্যরা।

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা: তৃতীয় দিনে ১০ জনের সাক্ষ্য

সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে রক্তাক্ত শ্রমিক অভ্যুত্থান ঘটে। আন্দোলনে জীবন দেন আগস্ত, স্পাইজ, এঞ্জেলস, ফিসার। মালিক এবং সরকার ভেবেছিল ফাঁসি দিয়ে শ্রমিক নেতাদেরকে হত্যা করে শ্রমিক আন্দোলন দমন করা যাবে। কিন্তু ন্যায্য দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলন হত্যা ও নির্যাতনের মাধ্যমে দমন করা যায় না। এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর দেশে দেশে। পরবর্তিতে ১৮৮৯ সালে ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের নেতৃত্বে ‘দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্যারিস কংগ্রেসে’ ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানের পর ১৬ বছরের স্বৈরাচার দূর হলেও শ্রমিক শোষণের ব্যবস্থার কোন বদল ঘটেনি। জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা এই জাতিকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। অথচ সবচেয়ে বড় বৈষম্য শ্রমিকের সাথে প্রতিনিয়ত হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকার পেছনে প্রধান শক্তি যে শ্রমিক তারা কত মজুরী পায় সে প্রশ্নে শাসক শ্রেণি নীরব। পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা শ্রমিক আর মালিক শ্রমিকের বিশাল বৈষম্যের দেশ এই বাংলাদেশ। গার্মেন্টস, পরিবহন শ্রমিক, মোটর মেকানিক, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশা চালক, লেদ কারখানার শ্রমিক, সিএনজি, ইজিবাইক চালক, চা, রি-রোলিং, তাঁত শ্রমিক, দোকান ও হোটেল কর্মচারীসহ বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের যে আয় তাতে মানসম্পন্ন জীবনযাপন করা সম্ভব? দেশে শ্রমিকের মজুরী কম আর বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে কয়েক লাখ কোটিপতির জীবনে বিলাসীতার শেষ নেই। শ্রমিকদের শোষণ করেই তাদের এই সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে। পুঁজিবাদ টিকে আছে শ্রমিক শোষণ করে, মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে এই ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে। মে দিবস এই শিক্ষা দেয়-শ্রমিকের দাবি যতই ন্যায্য হোক না কেন, লড়াই ছাড়া তা আদায় করা যায় না। মালিক ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের কাছে দয়া বা করুণা চেয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ মে দিবসের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং শ্রমিক শ্রেণির লড়াইকে বেগবান করার আহবান জানান।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo