ঢাকা অফিস
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশের ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইউজিসিকে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বেসরকারি ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
যে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো:
১. দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (মোহাম্মদপুর, ঢাকা) ২. ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (সাতমসজিদ রোড, ঢাকা) ৩. স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (সিদ্ধেশ্বরী, ঢাকা) ৪. দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি (রাজারবাগ, ঢাকা) ৫. প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি (গুলশান, ঢাকা) ৬. প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি (বনানী, ঢাকা) ৭. আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (শ্যামলী, ঢাকা) ৮. সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি (পান্থপথ, ঢাকা) ৯. বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস (মিরপুর, ঢাকা) ১০. নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (সিলেট) ১১. ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (কিশোরগঞ্জ) ১২. নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (খুলনা) ১৩. ফেনী ইউনিভার্সিটি (ফেনী) ১৪. ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি (কুমিল্লা) ১৫. পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (চট্টগ্রাম) ১৬. চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি (চট্টগ্রাম)
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর ইউজিসি এখন আইন পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যায়, তা নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। আইন অনুযায়ী সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠার পর প্রথমে সাত বছর এবং পরবর্তীতে আরও পাঁচ বছর, অর্থাৎ মোট ১২ বছরের মধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে তার নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তর করতে হয়। এই সময়ের মধ্যে ব্যর্থ হলে ইউজিসি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
এর আগেও, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিলো ইউজিসি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় পরবর্তীতে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ, দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাকি ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছিলো। বর্তমান ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও ইউজিসি অনুরূপ বা কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস