রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা নাড়া দিয়েছে দেশবাসীকে।
বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ শুরু হয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি দেশের শোবিজ অঙ্গনেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেক তারকা ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের কণ্ঠেও ফুটে উঠেছে তীব্র প্রতিবাদ ও হতাশা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে অভিনেত্রী বাঁধন ঘটনার বীভৎসতা এবং সাধারণ মানুষের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি লেখেন, এটা এক ধরনের মর্মান্তিক ছবি। কারো হত্যা হতে দেখা, যেখানে বাকি সবাই দাঁড়িয়ে দেখছে। কিছুই করছে না। এটা কীভাবে সম্ভব? কী ধরনের দেশে আমরা বেঁচে আছি? মানুষ দাঁড়িয়ে দেখলো। কিন্তু কেউ এগিয়ে গেলো না। কতটা ভয়াবহ?
যুবদল নেতা-ব্যবসায়ী হত্যা-খতিবের ওপর হামলায় জামায়াত আমিরের তীব্র প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটিকে অবিশ্বাস্য উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন জানিয়ে আরো লেখেন, আমি আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা কি আর কেউ অনুভব করছেন? মনে হচ্ছে না আমরা যেন নরকে বাস করছি? তিনি সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, আর সরকার? সবসময়কার মতোই নিশ্চুপ। তারা কোথায়? কথা বলে না কেনো? কিছু করে না কেনো?
দেশের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাঁধন তার পোস্টে বলেন, আমি কি এই দেশে নিরাপদ? আমি কি সত্যিই যা মনে করি তা বলতে পারি? না কি সত্যি কথা বলার অপরাধে আমিই হব পরবর্তী টার্গেট?
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে এলোপাতাড়ি আঘাত ও কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। প্রাথমিক অভিযোগ উঠেছে, চাঁদা না পেয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় যুবদল অভিযুক্তদের বহিষ্কার করেছে। পুলিশ ঘটনার প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এই হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে করা হবে।
স্বাআলো/এস