অন্যের স্ত্রীকে প্ররোচিত করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগে করা মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন এবং ন্যায়বিচার চেয়েছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে মামলার আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানিতে তারা এই দাবি করেন।
আত্মপক্ষ শুনানির নির্ধারিত দিনে নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা আদালতে হাজির হন। মামলার বাদী তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসানও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং এই পর্যন্ত সাক্ষ্য দেওয়া ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ তাদের সামনে পড়ে শোনান।
এরপর বিচারক তাদের জিজ্ঞেস করেন, “আপনারা দোষী, না নির্দোষ?” উত্তরে তারা বলেন, “আমরা নির্দোষ।” তারা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
সাফাই সাক্ষ্য দেবেন কিনা – বিচারকের এমন প্রশ্নে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, আগামী ধার্য তারিখে তারা লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করবেন এবং নিজেরাই সাক্ষ্য দেবেন। এরপর আদালত সাফাই সাক্ষীর জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয় এবং তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রাকিব বিষয়টি জানতে পারেন। অভিযোগ অনুযায়ী, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা অবস্থাতেই তাম্মি নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তাম্মিকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন নাসির। তাম্মি ও নাসিরের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী কন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন এবং রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার অপূরণীয় ক্ষতি।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে উভয় পক্ষই এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করেন, যা ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ আদালত নামঞ্জুর করে দেন। ফলে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে মামলাটি চলতে থাকে এবং সুমি আক্তার অব্যাহতিপ্রাপ্ত থাকেন। গত ১৬ এপ্রিল মামলাটিতে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
স্বাআলো/এস