নতুন নোটের ছবি প্রকাশ, আসল-নকল চেনার উপায়

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | May 30, 2025

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে নতুন নকশার ব্যাংক নোট বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১ জুন থেকে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোটগুলো বাজারে পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে, যাতে সাধারণ মানুষ আসল নোট সহজেই চিনতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত এই নতুন নোটগুলো ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত। প্রতিটি নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, নোটের মূল্যমান এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ থাকবে।

১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট

এই নোটের আকার হবে ১৬০ মিমি x ৭০ মিমি এবং এতে বেগুনি রঙের আধিক্য থাকবে। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং মাঝখানে প্রতিশ্রুত বাক্য ও মূল্যমান মুদ্রিত থাকবে। ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকবে জাতীয় ফুল শাপলার ছবি। পেছনভাগে থাকবে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি।

নতুন ডিজাইনের নোট আসছে বাজারে

১০০০ টাকার নোটে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ৫ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত থাকবে; নোট নাড়াচাড়া করলে সুতার রং লাল থেকে সবুজ হবে এবং রংধনু বার ওঠানামা করবে। ডানদিকে কোণায় মুদ্রিত ‘1000’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (OVMI) দ্বারা মুদ্রিত, যা নাড়াচাড়া করলে ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ হবে। এছাড়া UV ফ্লোরেসেন্স, See Through image, Microprint, অসমতল ছাপা, লুকানো ছাপা, Iridescent Stripe এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ৬টি বৃত্তের মতো বৈশিষ্ট্য এতে যুক্ত করা হয়েছে।

৫০ টাকা মূল্যমানের নোট

এই নোটের আকার হবে ১৩০ মিমি x ৬০ মিমি এবং এতে গাঢ় বাদামী রঙের আধিক্য থাকবে। সম্মুখভাগে বামপাশে আহসান মঞ্জিল এবং মাঝখানে প্রতিশ্রুত বাক্য ও মূল্যমান মুদ্রিত থাকবে। ব্যাকগ্রাউন্ডে শাপলার ছবি থাকবে। পেছনভাগে থাকবে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এর বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’।

৫০ টাকার নোটে মোট ৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হলো: ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা যাতে ‘৫০ পঞ্চাশ টাকা’ খচিত এবং নাড়াচাড়া করলে রং লাল থেকে সবুজ হবে। গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image থাকবে, যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া Microprint, অসমতল ছাপা, লুকানো ছাপা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ২টি বৃত্তের মতো নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০ টাকা মূল্যমানের নোট

এই নোটের আকার হবে ১২৭ মিমি x ৬০ মিমি এবং এতে সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে। সম্মুখভাগে বামপাশে ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির এবং মাঝখানে প্রতিশ্রুত বাক্য ও মূল্যমান মুদ্রিত থাকবে। ব্যাকগ্রাউন্ডে শাপলার ছবি থাকবে। পেছনভাগে থাকবে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি।

২০ টাকার নোটে মোট ৫ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা যাতে ‘৳২০ বিশ টাকা’ খচিত এবং নাড়াচাড়া করলে রং লাল থেকে সবুজ হবে। গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image থাকবে, যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘২০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়াও Microprint এর মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, নতুন এই নোটগুলো জালটাকা শনাক্ত করতে এবং জনসাধারণের লেনদেনকে আরো নিরাপদ করতে সহায়ক হবে। নতুন নোটগুলো আগামী ১ জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শাখা ও তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হবে।

স্বাআলো/এস