সম্পাদকীয়: যশোরের মুক্তেশ্বরী নদী দখল করে মণিরামপুরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি পুকুর কেটেছে। নদীর প্রায় এক বিঘা জমি ওই পুকুরের পেটে ঢুকে গেছে।
এমনিতেই নদীটি নিভু নিভু অবস্থায় কোনো রকমে টিকে আছে। তারপর এভাবে দখল প্রক্রিয়া চলতে থাকলে তার অস্তিত্ব আর থাকবে না। শুধু মুক্তেশ্বরী নদী নয়, দেশের সব নদীর অবস্থা এমন। দেশে বর্তমানে নদ-নদীর সংখ্যা এক হাজার আট। ৬৪ জেলায় নদী দখলদারের সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার ৩৯৬ জন।
দেখা যাচ্ছে নদীর চেয়ে দখলদারের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা কখনো নদী ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেন। আবার কখনো বালু উত্তোলন করেন। তবে গত দেড় দশক ধরে নদী দখল ও নদী দূষণ অনেক বেড়েছে। এসব নদী মৎস্য খামার ও ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। নদীগুলো ভুগছে নাব্য সংকটে। নৌপথে পণ্যসামগ্রী আমদানি- রফতানি দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। গণমাধ্যমে এসব তথ্য নিয়ে প্রায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
নদ-নদীতে পানিপ্রবাহ কমার কারণে কৃষি, মৎস্য ও গবাদিপশুনির্ভর মানুষের জীবন-জীবিকা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকেই পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবেশ- প্রতিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবহন ও যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম নদী। দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় প্রাচীনকাল থেকে নদ-নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের অনেক এলাকার নৌপথ নাব্য সংকটে ভুগছে। প্রাকৃতিক নিয়মে পলি পড়ে যেমন, তেমনই দখল-দূষণেও নদ-নদীর গভীরতা কমছে।
নদ-নদী আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। এই সম্পদ বাঁচাতে হলে খনন করতে হবে। নদ-নদীর পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে। মাঝে মধ্যে ড্রেজিং করা হয় নদীতে জমে থাকা পলি অপসারণ করার জন্য। নদী খননে অবস্থাপনা দূর করা জরুরী।
ড্রেজিং করা মাটি যেনো আবার নদীতেই না পড়ে সেজন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাআলো/এসআর