দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রফতানির সর্বনিম্ন মূল্যসীমা বেঁধে দিয়েছে ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি টন পেঁয়াজের সর্বনিম্ন মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। যা আগের দামের চেয়ে দ্বিগুণ। এ কারণে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। রফতানিতে মূল্যসীমা বেঁধে দেয়ায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ আমদানিতে বাংলাদেশি টাকায় ব্যয় হবে প্রায় ৯২ টাকা।
আমদানিকারকরা জানায়, এলসির মূল্যসীমা বেঁধে দেয়ার আগে প্রতিটন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হতো ২০০ থেকে ৩০০ ডলারের মধ্যে। আমদানিতে আমদানি শুল্ক না থাকায় ২০-২৫ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করা যেত। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৮০০ ডলার বেঁধে দেয়ায় এখন তা ৯০ টাকার উপরে দাঁড়াবে।
চলতি বছরে ভারতে পেঁয়াজের ফলন কম হওয়াসহ দেশটির বেশ কিছু রাজ্যে বন্যা হওয়ায় হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তাই অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কমানোর লক্ষ্যেই পেঁয়াজ রফতানিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। যা গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। এখন থেকে নতুন এলসি বা ঋণপত্র ৮০০ মার্কিন ডলারের নিচে গ্রহণ করবে না ভারত। আর যেগুলো আগে খোলা আছে সেগুলোকেও নতুন করে ৮০০ মার্কিন ডলারে করতে হবে বলে জানান আমদানিকারকরা।
এদিকে, গত ২৩ অক্টোবরে পর যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসেনি ভারতীয় পেঁয়াজ। ফলে কয়েক দফায় বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ৮০ টাকা থেকে বেড়ে দু’দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। ফলে আড়ত থেকেও পেঁয়াজ মিলছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের এক নেতা জানান, গত ২৮ অক্টোবর শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক আদেশে পিয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে আমদানি ঋণপত্র বা এলসি মূল্য ৮০০ ডলার বেঁধে দিয়েছে। ফলে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে।
জানা গেছে, ডলার সংকটের কারণে বেনাপোল বাজারের আমদানিকারকদের এমনিতেই এলসি দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। এখন অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করে নতুন এলসি করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। গত পাঁচদিন আগে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সার্কুলার জারির খবর ছড়িয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে বাজারে উচ্চমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ আমদানিতে বিকল্প দেশ না খুঁজে ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকলে বাজার আরো অস্থির হয়ে পড়বে মনে করেছেন ব্যবসায়ীরা।
স্বাআলো/এসএ