আজাদুল হক, বাগেরহাট: জেলার মোরেলগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সুইচ গেট বন্ধ রাখায় এ বছর উপজেলার শতশত একর কৃষি জমিতে আমন ধানের চাষ নিয়ে চরম শঙ্কায় পড়েছেন হাজারো কৃষক।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের মোরেলগঞ্জ খাউলিয়া ইউনিয়ন অংশের পূর্ব-চিপাবারইখালীর সুইচ গেটটি ব্যক্তি স্বার্থে বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা। সুইচ গেট দিয়ে পানি উত্তোলন ও বন্ধ করা নিয়েও চলছে এলাকায় উত্তেজনা। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের আশঙ্কা করছেন সাধারন কৃষকরা।
রবিবার (২৮ জুলাই) ওই এলাকায় খাউলিয়া ইউনিয়নের পূর্বচিপা বারইখালী গ্রামের কৃষক মনির, মোশারেফ, দুলাল, মহারাজ, ফারুক ও শাজাহান বলেন, আমরা পানির অভাবে এ বছর আগামভাবে আমনের বীজতলা তৈরী করতে পারিনি। সুইচ গেটটি বন্ধ রাখায় পর্যাপ্ত পানির অভাবে এখানে এ বছর আমন চাষ বিঘ্নিত হবে। সুইচ গেটটি খুলে দিলেই একটি মহল বিলে মাছ ধরার জন্য গেট থেকে পানি ওঠা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ি সংর্ঘষের আশঙ্কা করছি আমরা।
সাধারন কৃষকরা আরো বলেন খাউলিয়া ইউনিয়নের ৩নং, ৪নং, ৬নং ও ৯নং ওয়ার্ডের শত শত একর জমি চাষাবাদ হয় এই সুইচ গেট দিয়ে ওঠা পানি দিয়ে। তাই আমন চাষ করতে হলে যেকোনো মূল্যে গেট খুলে পানি ওঠার ব্যবস্থা করতে হবে।
ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুম হাওলাদার জানান, পানির অভাবে কৃষকরা এই ভরা মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছেনা। কৃষকরা বারবার সুইচ গেট খুলে দিচ্ছে। আর একটি মহল তা বন্ধ করে দিচ্ছে। যা নিয়ে স্থানীয় দুইটি গ্রুফ হয়েছে এবং যেকোনো মুহুর্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে ।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন র্বোডের মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা অংশের ৩৫/১ পোল্ডার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, খালের দুই পাড়ের বাসিন্দাদের সমন্বয় করে পানি ওঠা নামা করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে কিন্তু আমার কথা কেই শুনছেনা। পরিস্থিতি সংর্ঘষে রুপ নিতে পারে। ব্যাপারটি আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
খাউলিয়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মাহফুজ হাওলাদার জানান, আমরা কৃষকদের দুরবস্থা দেখে রবিবার (২৮ জুলাই) গেট খুলে দিয়েছি। কিন্তু কিছু ক্ষনের মধ্যেই স্থানীয় মজনু হাওলাদার এসে কৃষকদের সাথে দুঃব্যবহার করেছে এবং আবারো গেট বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে কৃষকদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মজনু হাওলাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাছির হাওলাদার জানান, ৬নং ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা নিচু তাই পানি উঠলে বীজতলা ডুবে যায়। তাই স্থানীয়রা গেট বন্ধ করে দেয়। তবে, এলাকাবাসিকে পকেট গেট বন্ধ করে মুল গেট খুলে দিতে বলা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন ভরা আমন মৌসুম তাই কৃষকদের বীজতলায় পানির প্রয়োজন। সুইচ গেট তদারকির দ্বায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কমিটির। সেই কমিটিতেও আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নেই। তবে, কৃষক যাতে পর্যাপ্ত পানি পায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম তারেক সুলতান বলেন, সুইচ গেটের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বাআলো/এস