বিনোদন
দিলারা হানিফ পূর্ণিমা

‘এদের আমি মানুষ বলতে নারাজ, ধিক্কার জানাই’

বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক | July 24, 2025

প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে উজ্জ্বল এক নাম দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। অসংখ্য হিট সিনেমা দিয়ে জয় করেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্মের দর্শকের মন। তবে রুপালি পর্দায় এখন তার উপস্থিতি অনিয়মিত। বর্তমানে তিনি ছোট পর্দার রিয়ালিটি শোগুলোতে বিচারক হিসেবেই বেশি পরিচিত।

শুক্রবার মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত হতে যাচ্ছে রান্নার রিয়ালিটি শো ‘সেরা রাঁধুনী সিজন-৮’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে, যেখানে অন্যতম বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এই শো এবং নিজের ক্যারিয়ারের নানা দিক নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন এই নন্দিত অভিনেত্রী।

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে মর্মাহত পূর্ণিমা

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে পূর্ণিমাকে। ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তিনি। নিজের মেয়ে উমাইজার কথা ভেবে বারবার শঙ্কিত হয়েছেন।

পূর্ণিমা বলেন, “ঘটনার পর থেকে চোখের পাতা এক করতে পারিনি। আমার মেয়েও উত্তরার একটি স্কুলে পড়ে। সেও তো মাইলস্টোনে পড়তে পারত! কোমলমতি প্রাণগুলো চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল, আর কিছু মানুষ সেই ভিডিও ধারণ করল। এদের আমি মানুষ বলতে নারাজ।”

এই ঘটনায় যারা মানবিকতার বদলে স্বার্থ হাসিল করেছে, তাদের প্রতি তীব্র ধিক্কার জানিয়ে তিনি বলেন, “দুঃসময়ে যারা পানির দাম আর রিকশার ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, তারা মানুষের কাতারে পড়ে না।” রানওয়ের এত কাছে স্কুল নির্মাণের অনুমতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই অভিনেত্রী।

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহত-নিহতদের তালিকা তৈরিতে কমিটি গঠন

‘সেরা রাঁধুনী’ ও ভবিষ্যৎ

টানা চারটি সিজনে ‘সেরা রাঁধুনী’র বিচারকের আসনে দেখা গেছে পূর্ণিমাকে। রান্না করতে ভালোবাসেন বলে শো-টি বেশ উপভোগ করেন তিনি। পূর্ণিমা বলেন, “মাছরাঙা ও স্কয়ারকে নিজের পরিবার মনে হয়। প্রতিবারই ভাবি, মেয়ের পড়াশোনার চাপের কারণে হয়তো করতে পারব না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের অনুরোধ ফেরাতে পারি না। জানি না পরের সিজনে থাকতে পারব কি না, তবে ব্যাটে-বলে মিললে বিচারক হিসেবে আমাকে আবারও দেখা যেতে পারে।”

বড় পর্দা ও ওটিটিতে ফিরতে চান

গত বছর রোজার ঈদে ছটকু আহমেদের ‘আহা রে জীবন’ সিনেমার পর পূর্ণিমাকে আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি। ওটিটি থেকেও কোনো প্রস্তাব পাননি বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, “হয়তো নির্মাতারা ভাবেন আমি সময় দেব না, অথবা ধরেই নিয়েছেন আমি কাজ করতে আগ্রহী নই। এটা ভুল ধারণা। একজন শিল্পী আজীবন ক্যামেরার সামনেই থাকতে চায়। আমি ভালো কাজের জন্য মুখিয়ে থাকি।”

তবে কাজের ক্ষেত্রে তার একটি শর্ত রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাকে আমার মতো চরিত্রেই নিতে হবে।” জয়া আহসান ও আফসানা মিমির উদাহরণ টেনে তিনি যোগ করেন, “জয়া আপা তার বয়সের চরিত্রেই পর্দায় আসছেন। আফসানা মিনি আপু ‘উৎসব’-এ কী দারুণ কাজ করলেন! এখন যদি কেউ আমাকে কলেজছাত্রীর মতো নাচা-গানার ছবিতে নিতে চান, সেটা তো সম্ভব নয়। জয়া আপার ‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো সুন্দর গল্প নিয়ে কেউ এলে আমি অবশ্যই করতাম।”

চলচ্চিত্রের বর্তমান জোয়ারে আশাবাদী

নিয়মিত চলচ্চিত্র দেখেন পূর্ণিমা। ঈদের ছবি ‘জংলি’, ‘দাগি’সহ বেশ কয়েকটি দেখেছেন এবং বাকিগুলো দেখার অপেক্ষায় আছেন। দেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি দারুণ আশাবাদী। তার মতে, “গত দুই-তিন বছরে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি অনেক বদলেছে। বড় বাজেটের ছবি হচ্ছে, বাজারও বড় হয়েছে। এই জোয়ারকে কাজে লাগাতে হবে। সত্তর বা আশির দশকের যে স্বর্ণালি দিনের গল্প আমরা শুনি, তা ফিরিয়ে আনার এটাই সেরা সময়।”

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo