সহিংস আন্দোলনের কারণে মানুষ আর বিএনপির সঙ্গে নেই: শেখ হাসিনা

জিয়া পরিবার পুরোটাই একটা খুনি পরিবার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিলেন। খালেদা জিয়া ক্ষতায় এসে সেই একইভাবে এ দেশে হত্যাকাণ্ডের রাজনীতি শুরু করেন। ২০০৭ সালে আর জীবনে রাজনীতি করব না বলে তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়। সেখানে বসে এখন দেশের মানুষকে হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করাচ্ছে।

এবার প্রথমদিকে বিএনপি আন্দোলনে কিছু মানুষের সমর্থন পেয়েছিলো। কিন্তু সহিংস আন্দোলন করায় মানুষ এখন আর তাদের সঙ্গে নেই।

গোপালগঞ্জ সফরের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের নামে এখন তারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে।

পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা এদের ওপর ভর করেছে। পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পেটাল, এর চেয়ে জঘন্য কাজ মনে হয় আর হতে পারে না। পুলিশ-একটা গরিব মানুষের ছেলে, একটা চাকরি করে। তাকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, সে যখন বেহুঁশ হয়ে গেছে, মৃতপ্রায় তার মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে মাথায় কোপালো, মারলো। এ কোন দেশে আমরা বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরাই বিএনপির নেতা। কী বীভৎস এরা। এভাবে একটা পুলিশ পিটিয়ে মারলো। অ্যাম্বুল্যান্সে পুলিশ ঢোকার পর সেখানে আগুন দিলো।

২-৩টা অ্যাম্বুল্যান্স পোড়ালো। সাধারণ রোগী নিয়ে যাচ্ছে, সেই অ্যাম্বুল্যান্সের ওপর তারা আক্রমণ করে। রোগীসহ অ্যাম্বুল্যান্সের ওপর আক্রমণ করে বিএনপি। এই হলো তাদের চরিত্র। তাদের ওপর মানুষের আস্থা-বিশ্বাস থাকবে কী করে। এখন আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ওই ইসরায়েলের কাছ থেকে নেয়া। যারা প্যালেস্টাইনের ওপর আক্রমণ করছে। হাসপাতালে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে গাজায়। এরা মনে হয় ওইখান থেকে শিক্ষা নিয়ে চলে।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার তারা আউটসোর্সিং আন্দোলন করে। সমাজের কিছু অবাধ্য লোকজনের হাতে টাকা দিয়ে আগুন দেয়ায়। যুবদলের নেতা নিজে সরাসরি আগুন দিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। জনগণ কিন্তু সচেতন। তাদের ধরে ধরে পুলিশে দিয়ে দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বারবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। এই কোটালীপাড়াতেও বিশাল বিশাল বোমা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিলো। মিটিংয়ে আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা এগুলো তো প্রতিনিয়ত ছিলো। সরাসরি গুলি- এই অবস্থার মধ্য দিয়েও আল্লাহ বারবার আমাকে বাঁচিয়ে রাখলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ’৯৬ সালে সরকার গঠন করি। আবার ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। ২০০৯ থেকে আমরা এ পর্যন্ত একটানা সরকারে আছি। অন্তত আজ এইটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশটা বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে, এখন আর খাদ্যের হাহাকারটা নেই। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পেরেছি। শিক্ষার সুযোগ আমরা সৃষ্টি করেছি। ঠিক যা জাতির পিতা চেয়েছিলেন। একটানা সরকারে থাকতে না পারলে আমাদের উন্নয়ন দৃশ্যমান হতো না।

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য দেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শহীদ উল্লাহ খন্দোকার, আয়নাল হোসেন সেখ প্রমুখ।

কোটালীপাড়ায় মতবিনিময় শেষে তিনি সড়কপথে টুঙ্গিপাড়া যান। বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সভা করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

টোলপ্লাজায় নিহত ৬: সেই বাস চালক গ্রেফতার

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায়...

পটুয়াখালীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: মহান ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে...

কেউ যেনো মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: জামায়াতে আমির

ছাত্রদের স্যালুট জানানোর ইচ্ছা পোষণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর...

নড়াইলে ইউপি সদস্যকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা

নড়াইলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারী (৫০) ইউপি সদস্যের মৃত্যু...