বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দেশকে ভালোবাসতে পারে না, দেশের উন্নয়ন দেখে না, দেশের উন্নয়নের সাথে তাল মিলাতে পারে না, তারা আর যাই হোক দেশপ্রেমিক হতে পারে না। এরা ভালোকে ভালো বলতে পারে না। এরা সব সময় কালো অধ্যায় সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে। এসব অপকর্মের কারণে বিএনপি-জামায়াত এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। দেশের মানুষ এদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
শনিবার (৪ মে) অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ইঙ্গেলবার্নে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট অস্ট্রেলিয়া শাখার মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত নামক গোষ্ঠী সবসময় দেশকে নিয়ে অপপ্রচার করে। এরা বলে বাংলাদেশ নাকি দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, দেশে নাকি কোনো উন্নয়ন হয়নি, বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে, পাকিস্তান আমলই ভালো ছিলো, আমরা পাকিস্তানে ফিরে যেতে চাই।
এমন অনেক কথাই তারা বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বাঙালি জাতি এখন অনেক সচেতন। দেশের মানুষ তাদের এসব গুজব এখন আর বিশ্বাস করে না। তারা দেশের উন্নয়নকে অস্বীকার করে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দেশের স্বার্থ, মানুষের স্বার্থ হলো সবথেকে বড় স্বার্থ। আমরা সকলেই আমাদের মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমরা সকলকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমাদের একজন মানুষও না খেয়ে ও বিনা চিকিৎসায় মারা যাক তা আমরা চাই না। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব উন্নত হয়েছে আমরা বলব না, তবে পরিবর্তন হয়েছে। আমরা দেশের সকল দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা সকল বাঁধাকে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি কারণ আমাদের একজন নেত্রী আছেন, যিনি কখনো কোনো অপশক্তির কাছে মাথানত করেননি।
আজ বাংলাদেশ অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে উল্লেখ করে নাছিম বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই রূপান্তরের মহানায়ক হলেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে এটিকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ আজ সকল সমস্যা মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, গাঁজা উপত্যকায় গণহত্যা, ইসরাইল ইরানের উত্তেজনা এসব বৈশ্বিক সমস্যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। যার প্রভাব অনেকটাই আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ আজকে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। এতো ছোট একটি দেশে ১৮ কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদিত হচ্ছে, এটা কোনোদিনই সম্ভব হত না যদি কৃষিখাতে উন্নতি না হত এবং এই কৃষিখাতে উন্নয়ন কখনোই সম্ভব হত না যদি বঙ্গবন্ধুর কন্যার বিশেষ দৃষ্টি না থাকত। এই জন্য সারা জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
উপস্থিত কৃষিবিদদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় আপনারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনারাই আমাদের দেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি তুলে ধরছেন। আপনারা আপনাদের মেধা ও কর্মতৎপরতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করছেন। আপনাদের প্রতি দেশের মানুষের সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতা রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করে এটা সত্যি। তবে শুধুমাত্র রেমিট্যান্সের অর্থ দিয়ে একটি দেশ অগ্রসর হতে পারে না। বিশ্ব সভায় অগ্রসর হওয়ার জন্য দরকার শিক্ষা, জ্ঞান, সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। সে জায়গায় আপনারা যেভাবে ভূমিকা রাখছেন তা অন্য কেউ পারে না। এটি আমাদের কৃষিবিদদের জন্য একটি গৌরবময় বিষয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন বাহাউদ্দিন নাছিম। এ সময় বাংলাদেশে থেকে টাকা পাচার, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ব্যবসায় ও পুঁজি-বিনিময় ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীরা। এ সময় নাছিম প্রতিটি প্রশ্নের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে জবাব দেন এবং যেসমস্ত সমস্যাগুলো অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত নাগরিকরা সম্মুখীন হচ্ছেন, তিনি তা লিখিত আকারে পেলে সাধ্যমতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পেশ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানান।
কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট অস্ট্রেলিয়া শাখার সভাপতি কৃষিবিদ আব্দুস সাদেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পরমেশ ভট্টাচার্য্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাআলো/এস