সম্পাদকীয়: সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে গত মাসে মারা গেছে ৫৪৪ জন। এর আগে জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলো ৪৭২ জন।
বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক হিসাব থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
চলতি মাসের ভয়াবহ তথ্য হলো মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন পাঁচজন। ২০ মার্চ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ছাগলছিড়াতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ১৮ মার্চ সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দরবস্ত এলাকায় জৈন্তাপুরে পিকআপ ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার ছয়দিন দিন আগে ১২ মার্চ আরো একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় চারজন প্রাণ হারান। এই ঘটনাটি ঘটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার ইলিয়াটগঞ্জে। মাছবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে চারজন নিহত হন।
সড়ক দুর্ঘটনার আরো কিছু কারণ হচ্ছে, আনফিট যান, নিয়ন্ত্রণহীন গতি, ড্রাইভার-হেলপারদের বেপরোয়া মানসিকতা, তাদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, ট্রাফিক আইন না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি।
সড়কে প্রাণ ঝরার সংখ্যা কি স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে বেশি হবে?
দেশের সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য আইন রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার পর গঠিত কমিটিগুলো নানান সুপারিশ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়েছে অনেক সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে। নির্দেশনা দিয়েছেন আদালতও, কিন্তু সড়কে নিশ্চিত করা যায়নি নিরাপত্তা।
দুর্ঘটনা কেনো ঘটে বা এটা প্রতিরোধে করণীয় কী- সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, করণীয়গুলো যথাযথাভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা। সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে মূলত দুর্ঘটনা ঘটছে।
অথচ বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অনেকেই রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা সরকার বা আদালতের কোনো আদেশ-নির্দেশেরই তোয়াক্কা করে না, আইন মানতে চায় না। তাদের অন্যায় চাপের কাছে প্রায়ই সরকারকে নতিস্বীকার করতে হয়। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার কাজ কঠিন হবে।
স্বাআলো/এস