সম্পাদকীয়: রমজান মাস সামনে নিয়ে ছোলা, ডাল, চিনিসহ রোজায় ব্যবহৃত প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
দফায় দফায় সরকারের ঘোষণা ছিলো রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু বরাবরের মতো এবারো রোজার আগেই বাজারে সক্রিয় হয়েছে অতি মুনাফালোভী চক্র।
চিনি, চাল ও ডালসহ প্রতিটি পণ্যের দাম সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
সরকারের বেঁধে দেয়া দেশি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। রোজার আগ মুহূর্তে ৮ মার্চ থেকে আবারো দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।
রমজান মাসকে সামনে রেখে সরকার চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। তবে বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই, উল্টো দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। গত এক সপ্তাহ আগেও যেখানে খোলা চিনি কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত, সেখানে রোজার আগ মুহূর্তে কেজি প্রতি চিনির দাম উঠেছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা।
রমজান মাসকে ঘিরে অন্যান্য দ্রব্যের ন্যায় লাগামহীন দামের আঁচ পড়ছে ডাল, ছোলা আর বেসনের দামে। ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত কয়েকদিনে ডালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। একই হারে বেড়েছে বেসনের দাম। ভালো মানের ছোলার দামও নতুন করে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে।
সরকার ব্যবসায়ীদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচা ছোলা আমদানির সুযোগ দিলেও তার সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে। বাংলাদেশে সব নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণে এমন প্রবণতা প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করা যায়। যে পণ্যগুলো প্রতিদিন বাজার থেকে কিনতে হয় এবং এর পরিমাণটাও বেশি। ধনী-গরিব সবাই এসব না কিনে পারেন না। সেগুলোর ক্ষেত্রে বাজারে এক ধরনের কারসাজি দেখা যায়। নিত্যপণ্যের দাম এভাবে সীমা ছাড়ালে একটি গোষ্ঠীর কাছে বিপুল অর্থ পুঞ্জীভূত হয়। উচ্চমধ্যবিত্ত ও ধনীরা এসব কিনতে চাপে না পড়লেও বিশাল নিম্নবিত্ত ও গরিবরা পিষ্ট হন। এটি নিশ্চিত করে বলা যায়, আমাদের বাজারে একটি দুষ্টচক্র রয়েছে। তাই পণ্যের দাম বিধি মেনে চলে না। সম্পূর্ণ দুষ্টচক্রের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।
স্বাআলো/এসআর