গত দুইদিনের টানা ভারী বর্ষণে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় পণ্য খালাস প্রক্রিয়া প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্দরের একাধিক শেডে পানি ঢুকে পড়ায় কোটি কোটি টাকার আমদানি পণ্য নষ্ট হওয়ার তীব্র আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে বন্দরের ৯, ১২, ১৫, ১৬ ও ১৮ নম্বর শেডে যানবাহন ও কর্মীদের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় লোড-আনলোড কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া কাঁচা পণ্যের মাঠ এবং ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালেও হাঁটু পানি জমে আছে, যা আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে অচলাবস্থা তৈরি করেছে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণেই প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টিতে এ ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়। বন্দর সড়কের চেয়ে পণ্যগারগুলো (শেড) নিচু হওয়ায় এবং পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
বেনাপোল ৯২৫ হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদ আলী বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে শেড তৈরি করায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে আমদানি-রফতানি পণ্য নষ্ট হচ্ছে, যা বাণিজ্যে ধস নামাতে পারে। আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সঙ্গে মিলে কয়েকবার পানি অপসারণের চেষ্টা করলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।”
বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আটক
একই অভিযোগ করেন বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সভাপতি। তিনি বলেন, “পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে শেড নির্মাণ করায় ভারী বর্ষণে আমদানি পণ্য নিয়মিতই বিনষ্ট হচ্ছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতির কারণ।
এদিকে, বন্দর কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার জন্য রেল বিভাগকে দায়ী করছে। বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন রেজা জানান, “বন্দরের জলাবদ্ধতা প্রতি বছরই তৈরি হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা দ্রুত এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পার্শ্ববর্তী হাওড়ের সঙ্গে বন্দরের ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি।”
এই অচলাবস্থার কারণে বন্দরে পণ্যজট বাড়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আদায়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস