৫ বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে, জনজীবন বিপর্যস্ত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে উঠে এসে বর্তমানে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকলেও এর প্রভাবে আজ শুক্রবার (৩০ মে) সারা দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এর প্রভাবে আজ দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে এবং আগামীকাল শনিবারও কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে গভীর নিম্নচাপটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে। এটি বর্তমানে সাতক্ষীরা এবং এর কাছাকাছি অঞ্চলে স্থল নিম্নচাপ রূপে অবস্থান করছে এবং ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হয়ে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান, গভীর নিম্নচাপটি এখনো স্থল গভীর নিম্নচাপ রূপে আছে এবং এটি ধীরে ধীরে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি হবে।
রেকর্ড বৃষ্টিতে প্লাবিত নিচু এলাকা, দুর্ভোগে মানুষ
আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, স্থল গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আজ ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আজ সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা এবং ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতেও আজ সারা দিন এভাবে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে।
একেএম নাজমুল হক আরো জানান, আগামীকাল শনিবার রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এটি গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী সময়ে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হতে পারে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা পরদিন বুধবার সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে গতকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে সর্বোচ্চ ১৬৮ মিলিমিটার এবং রাজধানীতে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
বন্যার শঙ্কা, নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে
নিম্নচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে অতি বর্ষণের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, যার ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দেয়।
বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি ও উঁচু জোয়ারের পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উঁচু জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় দেখা দেয়া জলাবদ্ধতায় উপকূলের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
স্বাআলো/এস