আজিজুর রহমান, (চৌগাছা) যশোর: যশোরের চৌগাছার দীঘলসিংহা গ্রামের কৃষক রাজু আহম্মেদকে পুলিশ হেফাজতে হত্যার ঘটনায় বাঘারপাড়া থানার সাবেক ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) নিহত রাজুর মা কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এ ঘটনায় পূর্বে দায়েকৃত হত্যা মামলার নথি তলবসহ আগামী ২১ অক্টোবর অভিযোগের শুনানি শেষে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুচ।
মামলার আসামিরা হলেন- বাঘারপাড়া থানার সাবেক ওসি শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, এসআই নাসিরুল হক খান, এসআই শাহ আলম, এএসআই শামীম রেজা, এএসআই দেবাশীষ মন্ডল, এএসআই ফারুক হোসেন, কনস্টেবল জিন্নাহ আলী, কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, কনস্টেবল গোলাম মোস্তফা ও চৌগাছা থানার এসআই জামাল।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, রাজু আহম্মেদ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ২০১৮ সালের ৩০ মে সন্ধ্যায় চৌগাছা থানার এসআই জামাল দিঘলসিংহা গ্রামের রাজুর বাড়িতে গিয়ে কথা আছে বলে তাকে নিয়ে যান। রাত ৯টার দিকে রাজুর মাসহ স্বজনেরা চৌগাছা থানায় গিয়ে এসআই জামালের কাছে ছেলের সন্ধান চান। তখন এসআই জামাল জানান, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর রাজুর মাসহ স্বজনের বাড়িতে পৌঁছাতে না পৌঁছাতে বাঘারপাড়া থানার এসআই নাসিরুল হক খান ফোন করে জানান, রাজুকে তিন কেজি গাঁজা ও ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে।
ওই রাতে রাজুর মা ও স্বজনেরা বাঘারপাড়া থানায় গেলে রাজুকে ছাড়াতে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ওই সময় এএসআই দেবাশীষ মণ্ডলের হাতে এক লাখ টাকা দিয়ে রাজুকে আদালতে চালান করে দিতে অনুরোধ করেন তার স্বজনেরা। এএসআই দেবাশীষ মন্ডল টাকা গ্রহণ করে পরদিন দুপুরে রাজুকে থানা থেকে নিয়ে যেতে বলেন স্বজনদের। পরদিন সকালে রাজুর মা ও স্বজনেরা জানতে পারেন রাজুর মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে আছে।
খোঁজ নিয়ে রাজুর স্বজনেরা জানতে পারেন আসামিরা যশোর-মাগুরা সড়কের ভাটার আমতলা গরুর হাটের পাশের মেহগনি বাগানে গুলি করে হত্যা করেছে রাজুকে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গত ২০১৮ সালের ৩১ মে বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে গত ২০১৯ সালের ৬ মার্চ চূড়ান্ত রিপোর্টের শুনানি শেষে মামলাটি নথিজাত করা হয়।
এ ঘটনায় সে সময় রাজুর পরিবার মামলা করতে চাইলে আসামিরা বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন। ফলে ঘটনার পর মামলা করা যায়নি। দীর্ঘদিন পর পরিবেশ অনুকূলে আশায় বাদী আদালতে এ মামলা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
স্বাআলো/এস