প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতি, ধাওয়া দেয়ায় পুলিশকে এলোপাতাড়ি গুলি

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক প্রবাসীকে বহনকারী মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতি টের পেয়ে টহলরত হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা ডাকাতদের ধাওয়া দিলে ডাকাতদল পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতদের গুলিতে হাইওয়ে পুলিশের এক রেকার চালক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৩০ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া বাইপাস এলাকায়। ঘটনার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ ডাকাতদলের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করেছে।
প্রবাসী বিউটি আক্তার শুক্রবার জর্দান থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এরপর রাতে পরিবারের সদস্য (ননদ সুমাইয়া আক্তার, সম্পা, শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও তার শিশু সন্তান) সহ টঙ্গী থেকে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। সুমাইয়া আক্তার জানান, রাত আড়াইটার দিকে তাদের মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের পুষ্টকামুরী চরপাড়া এলাকায় পৌঁছালে অন্য একটি মাইক্রোবাস তাদের গতিরোধ করে। সেই মাইক্রোবাস থেকে ৭ থেকে ৮ জন সশস্ত্র ডাকাত নেমে মুহূর্তেই সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।
ডাকাতদের কাছে বন্দুক, ওয়াকিটকি, হাতকড়াসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ছিলো। তারা যাত্রীদের কাছ থেকে ৫-৬টি মোবাইল ফোন, নগদ ৭০ হাজার টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নেয়।
যশোরে কোরবানির পশু কিনতে এসে হামলায় আহত, আড়াই লাখ টাকা ছিনতাই
ডাকাতির ঘটনা টের পেয়ে টহলরত হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা ডাকাতদের ধাওয়া করে। এ সময় ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাদের গুলিতে হাইওয়ে থানা পুলিশের রেকার চালক তুহিন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। গুলির মুখে ডাকাতদলের সদস্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। গুলিবিদ্ধ তুহিনকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রবাসী বিউটির শ্বশুর আব্দুল হামিদ অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় টঙ্গী থেকে ভাড়া করা মাইক্রোবাসের চালক মুস্তাকিন ও হেলপার জুয়েল জড়িত থাকতে পারে। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিলো বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদলের ফেলে যাওয়া একটি মাইক্রোবাস ও প্রবাসীকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তিনি হাইওয়ে থানা পুলিশের রেকার চালক। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এর আগে ২৯ মে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই, ২১ মে যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি মির্জাপুরে একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। মহাসড়কে বেড়ে চলা এসব অপরাধমূলক ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাআলো/এস