যশোরে চিকিৎসককে ধর্ষণ-ব্ল্যাকমেইল, ভুয়া মেজর গ্রেফতার

বিয়ের প্রলোভনে এক নারী চিকিৎসককে একাধিকবার ধর্ষণ, তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও গোপনে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল এবং প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বেনজির হোসেন নামে এক চিহ্নিত প্রতারককে আটক করেছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
সে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
আটককৃত বেনজির হোসেন নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (৩ জুন) মধ্যরাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বেনজির যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের একটি ডেন্টাল চেম্বারে ওই নারী চিকিৎসকের কাছে যান সেবা নিতে। সেখানে তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর একজন মেজর হিসেবে পরিচয় দেন। এক পর্যায়ে তিনি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারী চিকিৎসকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
যশোর সীমান্তে চামড়া পাচার ও পুশইন ঠেকাতে বিজিবি সতর্ক, টহল জোরদার
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বেনজির ওই চিকিৎসককে যশোর শহরের জাবির হোটেলে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এ সময় তিনি গোপনে ওই চিকিৎসকের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ধারণকৃত এসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তিনি ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়েও একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলায় আরো বলা হয়, ওই নারীকে আমেরিকায় নিয়ে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বেনজির চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে নগদ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। একইসঙ্গে কৌশলে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর করা দুইটি অলিখিত চেকও সংগ্রহ করেন।
পরে ওই নারী চিকিৎসক যখন বেনজিরের কাছে টাকা ও চেক ফেরত চান, তখন সে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্টো তাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং গোপনে ধারণকৃত ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এরপর খোঁজখবর নিয়ে ওই নারী চিকিৎসক জানতে পারেন, বেনজির আসলে সেনাবাহিনীর কেউ নন। তিনি একজন চিহ্নিত প্রতারক এবং বিভিন্ন সময়ে বিশেষ বাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে লোকজনের সাথে প্রতারণা করাই তার মূল পেশা।
ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুরুল হক ভুঞা বলেন, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেনজির ঘটনার সব কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে পূর্বে একটি পর্নোগ্রাফি আইনের মামলা, দুইটি প্রতারণাসহ মোট চারটি মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের সদস্যরা বিষয়টি তদন্ত করছেন এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্বাআলো/এস