তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে ‘রেড অ্যালার্ট’, বাংলাদেশেও সতর্কবার্তা

ভারতের সিকিম রাজ্যে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যটিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দফতর।
বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় সিকিমের মাঙন, গ্যালশিং ও সোরেং জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সিকিমের হিমালয়ের চিতামু হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারতের সীমানা পেরিয়ে তিস্তা নদী নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে পানি বাড়লে তার প্রভাব বাংলাদেশের ভাটিতেও পড়ে।
এই অবস্থায় বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সতর্কবার্তা দিয়েছে যে, রংপুর বিভাগে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং এ সময়ে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগেও নদনদীর পানি আগামী দুইদিন বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে ঢল: বন্যা আতঙ্কে তিস্তাপারের মানুষ
শনিবার (৩১ মে) সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জারি করা জরুরি এক ঘোষণায় জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাবে বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মাঙন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারির প্রেক্ষিতে গ্যাংটকের অন্তর্গত দিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী অববাহিকায় বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ কারণে তিস্তা নদীর অববাহিকায় কর্মরত মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে গ্যাংটক জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই, সোমেশ্বরী ও মনু নদীর পানি আগামী দুইদিন বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজার জেলায় নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকি রয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানিও বাড়ছে, যা আগামী দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া, গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় নদীর পানি আগামী পাঁচদিন বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী পাঁচদিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদ-নদীর পানিও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
স্বাআলো/এস