জাতীয়

সেপ্টেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৭ জন

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | October 4, 2025

গত সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে ৪৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত এবং ৬৮২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল আরোহীর সংখ্যা সর্বাধিক, যা মোট নিহতের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৫১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৩ জন আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১২ জন পথচারী এবং ৫৬ জন চালক ও সহকারী রয়েছেন।

সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে (১৬১টি বা ৩৬%)। আঞ্চলিক সড়কে ১৩৯টি (৩১%), শহরের সড়কে ৮৯টি (২০%) এবং গ্রামীণ সড়কে ৫৭টি (১৩%) দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, চালকদের নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে (১৭১টি বা ৩৮%)। মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে ৯২টি (২১%), পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় ১১৯টি (২৭%), যানবাহনের পেছনে আঘাতের ঘটনায় ৫৮টি (১৩%) এবং অন্যান্য কারণে ছয়টি (১%) দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ভারী যানবাহন (ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, ট্রাক্টর) ছিল ২৫.৫৬%, মোটরসাইকেল ২৪.০৫%, যাত্রীবাহী বাস ১৮%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা) ১৫.২৭%। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন, ভটভটি) ৬.৬৫%, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও জিপ ৩.৯৩%, বাইসাইকেল ও রিকশা ২.৮৭% এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩.৬৩% দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে (৩০%)। রাতে ২৩%, দুপুরে ২১%, বিকেলে ১১%, সন্ধ্যায় ৭% এবং ভোরে প্রায় ৮% দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি হয়েছে (১২৮টি দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত)। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪% দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম (১৬টি ঘটনায় ১৪ জন নিহত)।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও মানসিক অস্থিরতা, ট্রাফিক আইন না মানা, দুর্বল তদারকি এবং মহাসড়কে স্বল্প গতির যান চলাচলকে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটি দুর্ঘটনা রোধে ১০টি সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, অধিকাংশ দুর্ঘটনা অতিরিক্ত গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে ঘটছে। তাই প্রযুক্তির মাধ্যমে যানবাহনের গতি পর্যবেক্ষণ এবং চালকদের মানসিক প্রশিক্ষণ জোরদার করা জরুরি।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo