প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন সজীব ওয়াজেদ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন সজীব আহমেদ ওয়াজেদ।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বুধবার (২৯ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়ে বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দেন। তারা তিনজনই দায়িত্ব পালন করছিলেন টেকনোক্র্যাট হিসেবে; অর্থাৎ, এমপি না হয়েও তারা মন্ত্রিসভায় এসেছিলেন।

ওই দিনই পদত্যাগপত্র দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারাও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। প্রধানমন্ত্রী তাদের মন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছেন।

ওই তিনজন ছাড়াও মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সালমান ফজলুর রহমান বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

তাদের মধ্যে সালমান ফজলুর রহমান সংসদ সদস্য। ফলে তার ক্ষেত্রে পদত্যাগের প্রশ্ন আসছে না।

আর উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন গত ২০ নভেম্বর সাংবদিকদের বলেছিলেন, উনার নিয়োগ পুরোটাই অবৈতনিক। উনি তো কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, তাদেরটা এখান থেকে (প্রক্রিয়া) হচ্ছে। যাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের গত সরকারের মেয়াদেও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি তাকে আবারো সেই দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।

গত ৩১ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করা হয়েছিল, এবারও একই রকম পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন। কেবল নির্বাচিত মন্ত্রীদের নিয়েই ওই ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিলো সরকার

অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারির...

অবৈধ অনুপ্রবেশ: বেনাপোল সীমান্তে আটক ১৭

মিলন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: যশোর ব্যাটালিয়ন ৪৯ বিজিবির...

বিয়েতে বিশ্বাসী নন, সম্পর্ক ও রোমান্স করতে চান নায়িকা

তারকাদের প্রেম-বিয়ে সবসময়ই ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে আলোচ্য বিষয়। তারকারাও তাদের...

নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের লাশ মিললো পুকুরে

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে এক বৃদ্ধের...