নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগর ও সুন্দরবন উপকূলে মাছ আহরণ শুরু

বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের উপকূলে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে মাছ আহরণ। মা ইলিশ রক্ষায় জনস্বার্থে সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) শেষ হয়। তাই শুক্রবার ভোররাতেই বাগেরহাটের জেলেরা সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীখাল ও বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যেতে শুরু করেছেন। সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা মোংলা ও শরণখোলার বিভিন্ন ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে ট্রলার ও নৌকা ছেড়ে যান। মাছ শিকারের টানা ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে সুন্দরবনের দুবলার চরের শুটকি পল্লীতেও শুটকী মৌসুম শুরু হচ্ছে। জেলেরা সুন্দরবনের দুবলার চরসহ অন্যান্য চরের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন।

ইতোমধ্যে মোংলার জয়মনির ঘোল এলাকায় অবস্থান করছেন। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য পণ্য নিয়ে সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন জেলেরা। সেখানে গিয়ে জেলেরা নির্দিষ্ট চরগুলোতে অবস্থান নিয়ে নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৪ এর মার্চ মাস পর্যন্ত ৫ মাসের জন্য দুবলার চরে থাকবেন এ জেলেরা। সেখানে ঘর ও শুটকি তৈরির মাঁচা বানিয়ে থাকবেন তারা। ভালো মাছ পেলে দীর্ঘ অবরোধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা জেলেদের।

সমুদ্রগামী মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শহিদ মল্লিক বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরে শুটকি তৈরির পেশাটি জেলেদের সারাবছরের রোজগারের জায়গা হিসেবে তৈরি হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম আর্থিক সুবিধা থাকলেও, জেলেরা প্রতিবছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুবলারচরসহ অন্যান্য চরে যান। এবারো ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলেরা সুন্দরবনে যাচ্ছেন। আশা করি এবার মাছ ভালো হবে। তবে জেলেদের বাঁচাতে হলে, শুটকি মৌসুমে সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য সহজ শর্তে সরকারি ঋণ প্রদান করতে হবে। তাহলে জেলেদের মধ্যে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে বলে দাবি করেন তিনি।

কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের সমুদ্রগামী জেলে ইব্রাহীম আমানি বলেন, শুটকি আহরণের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণ করতে জেলেরা সুন্দরবনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনেকে রওনা দিয়েছেন।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের দুবলার চরে শুটকি আহরণের জন্য জেলে, বহদ্দর ও ব্যবসায়ীরা আবেদন করেছেন। আবেদন প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই ও নির্দিষ্ট ফি গ্রহণের মাধ্যমে রাতে তাদেরকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হবে।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, ২২ দিন পরে সাগরে মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের সর্বোচ্চ টহল ছিলো। মৎস্য বিভাগের নজরদারির ফলে সাগরে কেউ মাছ আহরণ করতে পারেননি। এই কারণে আমরা আশা করছি এবার জেলেরা সাগরে ভালো মাছ পাবেন।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

মাহমুদউল্লাহ-ফাহিমের ঝড়ে দুর্দান্ত জয় বরিশালের

টার্গেটে ১৯৮ রান। বড় লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ৫১...

চুয়াডাঙ্গায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইসলামপাড়ার পানিতে ডুবে আরবী খাতুন (৫)...

আতশবাজি-ফানুস উৎসব নিয়ে যে বার্তা দিলেন জয়া আহসান

কতশত স্মৃতি নিয়ে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ২০২৪। নতুন বছর ২০২৫’...

শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আজ থেকে তিনদিন সারাদেশে দিন ও...