জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিনও বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে, যেটি আরবি শব্দ; এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্রিত করা। এ দিনে আগে আগে মসজিদে গেলে রয়েছে মহাপুরস্কারের ঘোষণা।
এখন দেশজুড়ে তীব্র শীত পড়ছে। এই সময়ে গোসল করা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর। জুমার নামাজের আগে গোসল করার যে বিধান ইসলামে রয়েছে, তা কি আবশ্যক? জুমার দিনে গোসল না করলে কি গুনাহ হবে?
গোসল যদি আপনার জন্য ফরজ হয়ে থাকে, তবে তা করা অবশ্যই ফরজ। এ ছাড়া অজু-নামাজ কিছুই আদায় করা যাবে না। আর গোসল ফরজ না হলে জুমার দিনে গোসল করা জরুরি কি না এ বিষয়ে ফকিহদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, ওয়াজিব বা আবশ্যক। কেউ বলেছেন, সুন্নত এবং কেউ বলেছেন, মুস্তাহাব। তবে অধিকাংশ আলিম জুমার দিনে গোসল করাকে সুন্নত বলেছেন। সুতরাং বিশেষ কারণ তথা তীব্র শীতের কারণে গোসল না করলে কোনো গুনাহ হবে না। (ফিকহুস সুন্নাহ: ১ / ৫৩-৫৫)
জুমার দিনে গোসল করে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত সম্পর্কে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করে, যদি তার কাছে থাকে, তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে, তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহর জন্য কাফফারা হবে। (আবু দাউদ: ৩৪৩)
হাদিসে কখনো নির্দেশ এবং কখনো ঐচ্ছিক হিসেবে জুমার দিনের গোসলের কথা বর্ণিত হয়েছে। যেমন এক হাদিসে রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘জুমার দিনে প্রত্যেক সাবালক ব্যক্তির জন্য গোসল করা ওয়াজিব।’ (বুখারি: ৮৭৯; মিশকাত: ৫৩৮)। অন্য এক হাদিসে এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমায় যাবে, সে যেন গোসল করে।’ (বুখারি: ৮৮২; মুসলিম: ৮৪৫)। আরেক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন শুধু অজু করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট। আর যে গোসল করে, সেটা অবশ্যই উত্তম।’ (তিরমিজি: ৪৯৭; মিশকাত: ৫৪০)। তবে ইবনে আববাস (রা.) বলেন, জুমার দিন গোসল করা ওয়াজিব নয়; তবে উত্তম। তাতে গোসলকারীর অধিকতর পবিত্রতা অর্জিত হয়।’ (আবু দাউদ: ৩৫৩; মিশকাত: ৫৪৪)
স্বাআলো/এস